ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর উপত্যকার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহকে আটক করে রাখার সাত মাস পর অবশেষে মুক্তি দিল দেশটির কর্তৃপক্ষ। ভারতীয় পার্লামেন্ট লোকসভার প্রবীণ এই সদস্য এবং অশীতিপর রাজনীতিবিদ গত বছরের আগস্টে কাশ্মীরকে দিখণ্ডিত করার সময় থেকে বন্দি ছিলেন।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, আজ শুক্রবার ফারুক আবদুল্লাহর মুক্তির নির্দেশ জারি হয়। তবে ওই নির্দেশে তাকে মুক্ত করে দেওয়ার কোনো কারণ উল্লেখ করেনি ভারতে মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। তার মুক্তির আদেশে সই করেন নবগঠিত জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনের মুখ্যসচিব শালীন কাবরা।
মুক্ত হওয়ার পর ফারুক আবদুল্লাহ বলেন, তার মুক্তির জন্য যারা লড়াই করেছে তিনি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। এছাড়া কাশ্মীরের বন্দি অন্যান্য নেতারও মুক্তির দাবি জানান তিনি। আগস্টে কাশ্মীরকে দিখণ্ডিত করার বিল পাশের আগে কাশ্মীরে হাজারো নেতার সঙ্গে তাকে গৃহবন্দি করা হয়।
মোদি সরকার বিতর্কিত অঞ্চল কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নিয়ে তাকে দ্বি-খণ্ডিত করার সময় উপত্যকায় ৫০ হাজারের বেশি সেনা মোতায়েন করে। যোগাযোগসহ সকল সুবিধা বিচ্ছিন্ন করে মাসের পর মাস অবরুদ্ধ করে রাখা হয় সেখানকার বাসিন্দাদের। গ্রেফতার করা হয় কাশ্মীরিদের নেতাদের।
বিতর্কিত ‘জননিরাপত্তা আইনে’ ফারুক আবদুল্লাহকে গ্রেফতার করা হলে তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়—বিশেষ করে তিনি দেশটির পার্লামেন্টের নির্বাচিত সদস্য হওয়ায়। কয়েকদিন আগে দেশটির আটটি বিরোধীদল সরকারের কাছে লেখা এক চিঠিতে ফারুক আবদুল্লাহসহ কাশ্মীরের অন্যান্য নেতাদের মুক্তির দাবি জানায়।
যৌথ ওই চিঠিতে সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলা হয়, দেশের গণতান্ত্রিক বৈপরীত্বের টুটি টিপে ধরা হচ্ছে। এদিকে ফারুক আবদুল্লাহ ছেলে এবং কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহও প্রায় সাত মাস ধরে বন্দি আছেন। এছাড়া উপত্যকার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিকেও বন্দি করে রেখেছে সরকার।
ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হাজারো আঞ্চলিক নেতাকর্মী, অ্যাক্টিভিস্ট এবং আইনজীবী এখনো হাজতে রয়েছেন। এছাড়া উপত্যকার আরও অনেকে নেতাকর্মীকে কাশ্মীরের বাইরে বিভিন্ন কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার এর জন্য জননিরাপত্তার অজুহাত দিচ্ছে।
আজ শুক্রবার ছাড়া পাওয়ার পর কাশ্মীরের তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সাবেক মন্ত্রী দেশটির পার্লামেন্টের পাঁচবারের সাংসদ ফারুক আবদুল্লাহ বলেন, ‘আজ আমার বলার কোনো ভাষা নেই, আমার অনুভূতি, আমি মুক্ত…। যারা আমাকে মুক্ত করতে লড়াই করেছেন তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’