কুমিল্লার দেবিদ্বারে স্কুলছাত্রী ছোট বোনকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় গ্রাম্য সালিশ বৈঠকের মধ্যেই খুন হয়েছেন ওই ছাত্রীর জেঠাতো ভাই। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের রঘুরামপুর আড়াইবাড়ি দোকানের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম আবদুল আউয়াল (৩০)। তিনি রঘুরামপুর গ্রামের ধুনু মিয়ার ছেলে। অন্যদিকে ঘাতক যুবকের নাম আসলাম (২২)। তিনি একই গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে।
এই ঘটনায় আরও অন্তত নয়জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুরুতর তিনজনকে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বিষয়টি মত ও পথকে নিশ্চিত করেছেন দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহিরুল আনোয়ার।
হামলার ঘটনায় স্কুলছাত্রীর বাবা আবদুস সাত্তারও আহত হয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, তার মেয়ে এবার স্থানীয় গঙ্গাম-ল রাজ ইনস্টিটিউশন থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। পরীক্ষার আগে থেকেই অভিযুক্ত আসলাম মেয়েটিকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে প্রায়ই উত্যক্ত করত। এ নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান অফিসে একাধিকবার বিচার সালিশ হলেও তাতে দমানো যায়নি আসলামকে।
ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে আমার মেয়ে কালিকাপুর গ্রামে তার নানাবাড়ি যায়। সেখান থেকে দুপুরে যায় মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জে খালার বাড়িতে। আসলাম খবর পেয়ে নানাবাড়ি কালিকাপুরে গিয়ে মেয়েটিকে দেখতে না পেয়ে কোথায় লুকিয়ে রেখেছি জানতে চায়। মেয়ের খোঁজ না দিলে সবাইকে হত্যা করবে বলে চিৎকার করতে থাকে। এ ঘটনায় রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ির পাশের দোকানের সামনে সালিশ বৈঠক ডাকা হয়।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সালিশের এক পর্যায়ে আসলাম ও তার ১০-১২ জন সহযোগী উত্তেজিত হয়ে ওই ছাত্রীর স্বজনদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে। এ সময় আসলামের হাতে থাকা ছুরি দিয়ে ওই ছাত্রীর জেঠাতো ভাই আবদুল আউয়ালের ঘাড়ে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহিরুল আনোয়ার জানান, ‘মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আসলামের বাবা মো. ছিদ্দিকুর রহমান পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আসলামের বড় ভাই আকিজকে আটক করা হয়েছে। আসলামসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারেও অভিযান চলছে।’