‘কোভিড-১৯’ ভাইরাস থাকার আশঙ্কায় চীনের উহান থেকে ভারতীয় বিশেষ বিমানে দেশটিতে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকা ২৩ বাংলাদেশি নাগরিক আগামীকাল দেশে ফিরছেন।
শনিবার বিকালে ইনডিগো এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশ্যে নয়াদিল্লি ছাড়বেন তারা।
দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরানের প্রটোকল অফিসার গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, উহান থেকে যারা ভারতীয় বিমানে এসেছেন ওনারা দেশে যাচ্ছেন। আগামীকাল তারা দেশে আসবেন।
ভারতে কোয়ারেন্টাইনে থাকা ২৩ বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে ফেরাতে সব খরচ সরকার বহন করছে। গত বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাদের দেশে আনার জন্য বিমানের টিকেটের খরচ পাঠানো হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, উহান থেকে ভারত আমাদের যে ২৩ বাংলাদেশিকে ফেরত এনেছে তাদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষ। এখন তারা দেশে আসবেন। গতকালই তাদের দেশের আসার কথা ছিল। তাদের দেশের আসার জন্য আমরা বিমান টিকেটের খরচ পাঠিয়ে দিয়েছি।
তবে শনিবার যে ২৩ বাংলাদেশির দেশে ফেরার কথা রয়েছে সে সম্পর্কে জানেন না জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় সরকার সব ধরনের ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে। সেখানে আমাদের ২৩ জনের দেশে আসা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা সেখানে যোগাযোগ করেছি, বলেছি যেভাবে পার এদের পাঠিয়ে দাও। এই মুহূর্তে এর বেশি কিছু আমি জানি না।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়। এরপর থেকে এটি উহানে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি চীন ছাড়িয়ে শতাধিক দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যাটার লাখ ছাড়িয়েছে। গত ১ ফেব্রুয়ারি উহান থেকে ৩১২ জন বাংলাদেশিকে বিমানযোগে দেশে আনে বাংলাদেশ সরকার।
এছাড়া গত ২৭ ফেব্রুয়ারি উহান থেকে ভারতীয় বিশেষ বিমান দেশটির ৮৯ নাগরিকের সঙ্গে বাংলাদেশের ২৩ নাগরিককে ভারতে নিয়ে যায়। করোনার আশঙ্কা থাকায় তাদের সেখানে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়।
কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় গতকাল দিল্লিতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ২৩ বাংলাদেশিকে দেশে ফেরার অনুমতি দেয়। দেশটির চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ২৩ বাংলাদেশির কারও শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ২৩ বাংলাদেশির দেশে ফেরার অনুমতি মেলার আগের দিন করোনাভাইরাসের কারণে ১৩ মার্চ থেকে আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশিদের ভারতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দেশটির সরকার। তবে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দূতাবাস-মিশন, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মকর্তারা এ স্থগিতাদেশের আওতার বাইরে থাকবেন।
- বিকাশে এসএমএস ও লিঙ্কের ফাঁদ, পা দিলেই সর্বনাশ
- করোনায় আক্রান্ত কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর স্ত্রী
ভারতের নিষেধাজ্ঞার পর বাংলাদেশও আজ শুক্রবার থেকে ভারতে ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। একই ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের দুটি বেসরকারি বিমান সংস্থা নভোএয়ার ও ইউএস বাংলা এয়ারলাইনস।
জানা যায়, উহান থেকে বিশেষ বিমানে ভারতে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী।