দেশের প্রথম ডিজিটাল নগর হিসেবে সিলেটের আত্মপ্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সিলেট

বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল নগর হিসেবে সিলেটের ১২৬টি গুরুত্বপূর্ণ এক্সেস পয়েন্টে এ প্রথম চালু হয়েছে ফ্রি ওয়াইফাই। শনিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিজিটাল সিলেট প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক মধুসুধন চন্দ।

তিনি জানান, সিলেট নগরের গুরুত্বপূর্ণ ১২৬টি পয়েন্টে একযোগে ফ্রি ইন্টারনেট সেবা চালু করার মাধ্যমে দেশের প্রথম বিভাগীয় ডিজিটাল নগর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল সিলেট। যার ইউজার নেম, ডিজিটাল বাংলাদেশ। এর পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা হচ্ছে দেশের জাতীয় স্লোগানের নামানুসারে ‘জয় বাংলা’।

তিনি [বলেন, ডিজিটাল সিলেট প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজার শহরে ফ্রি ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক চালু করে দিয়েছি গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে। সিলেটে আমরা প্রথম এক বছর আইসিটি মন্ত্রণালয়ের আইসিটি বিভাগ ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল পরিচালনা করবে। এরপর এর সম্পূর্ণ ব্যয়ভার ও পরিচালনা করবে সিলেট সিটি করপোরেশন।

জানা গেছে, ২০১০ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশের সবগুলো ইউনিয়নকে ডিজিটালাইজেশন করার মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার সূচনা করেন। ২০১৫ সালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশে আসার পর সিলেট শহরকে ডিজিটাল শহর করার চিন্তা করেন এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহের সঙ্গে আলোচনা করেন। এক্ষেত্রে তখনকার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনকে উৎসাহ দেন। এর জন্য ৫০ কোটি টাকার একটা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এক পর্যায়ে ৩০ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আজকের ডিজিটাল সিলেট প্রকল্পের আওতায় পাবলিক ওয়াই-ফাই জোন স্থাপন করা হয়।

জানা গেছে, প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার পর প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এসব ওয়াই-ফাই জোন দেখভাল করবে। পরবর্তীতে এগুলো তদারকি করবে সিলেট সিটি কর্পোরেশন।

সিলেট মহানগরের যেসব স্থানে থাকবে ওয়াই-ফাই পয়েন্ট : চৌকিদেখিতে ১টি, আম্বরখানা পয়েন্টে ৪টি, দরগা গেটে ২টি, চৌহাট্টায় ৩টি, জিন্দাবাজারে ৪টি, বন্দরবাজার ফুটওভার ব্রিজ এলাকায় ৩টি, হাসান মার্কেট এলাকায় ৫টি, সুরমা ভ্যালি রেস্ট হাউস এলাকায় ২টি, সার্কিট-হাউস জালালাবাদ পার্ক এলাকায় ৩টি, ক্বিন ব্রিজের দুই প্রান্তে ৬টি, রেলওয়ে স্টেশনে ৪টি, বাস টার্মিনালে ৩টি, কদমতলী পয়েন্ট ও সংলগ্ন এলাকায় ৫টি, হুমায়ুন রশীদ চত্বরে ৩টি, আলমপুর পাসপোর্ট অফিস এলাকায় ২টি, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় এলাকায় ৩টি, সিলেট শিক্ষাবোর্ডে ২টি, উপশহর রোজভিউ পয়েন্টে ২টি, শহাজালাল উপশহর ই-ব্লক ও বি-ব্লকে ১টি করে ২টি, টিলাগড় পয়েন্টে ৩টি, এমসি কলেজ এলাকায় ২টি, শাহী ঈদগাহ এলাকায় ৩টি, কুমারপাড়া এলাকায় ৩টি, কুমারপাড়া সড়কে ২টি, দক্ষিণ বালুচরে ১টি, টিচার্স ট্রেনিং কলেজে ১টি এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে ১টি এক্সেস পয়েন্ট থাকবে।

এছাড়াও সিলেট মহানগরের নাইওরপুল পয়েন্টে ২টি, মিরাবাজার সড়কে ১টি, রায়নগর এলাকায় ১টি, সোবহানীঘাট পুলিশ স্টেশন এলাকায় ২টি, ধোপাদিঘীরপাড় বঙ্গবীর ওসমানী শিশু উদ্যানে ১টি, বন্দরবাজার জামে মসজিদ এলাকায় ২টি, নয়াসড়ক পয়েন্ট ও সংলগ্ন এলাকায় ৪টি, কাজীটুলা এলাকায় ২টি, চৌহাট্টা সড়কে ৩টি, হাউজিং এস্টেট সড়কে ১টি, সুবিদবাজারে ১টি, মিরের ময়দানে ১টি, পুলিশ লাইন সড়কে ১টি, রিকাবীবাজার জেলা স্টেডিয়ামে ২টি, মদন মোহন কলেজ এলাকায় ১টি, মির্জাজাঙ্গাল সড়ক এলাকায় ২টি, পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্ট এলাকায় ১টি, খুলিয়াপাড়া এলাকায় ১টি, নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি এলাকায় ১টি, তালতলা হোটেল গুলশান এলাকায় ১টি, কাজিরবাজার সেতু এলাকায় ১টি, কাজিরবাজার সড়কে ২টি, খোজারখলা সিলেট টেকনিক্যাল কলেজ এলাকায় ১টি, বাগবাড়ি ওয়াপদা মহল্লা এলাকায় ১টি, পাঠানটুলায় ১টি, মদিনা মার্কেট পয়েন্টে ২টি, শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গেটে ২টি এবং ওসমানী মেডিকেল কলেজ এলাকায় ১টি এক্সেস পয়েন্ট থাকবে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এসব এক্সেস পয়েন্টের প্রতিটিতে একসঙ্গে ৫০০ জন যুক্ত থাকতে পারবেন। এর মধ্যে একসঙ্গে ১০০ জন উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। প্রতিটি এক্সেস পয়েন্টের চতুর্দিকে ১০০ মিটার এলাকায় ব্যান্ডউইথ থাকবে ১০ মেগাবাইট/সেকেন্ড।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে