মধ্যরাতে বাড়িতে হানা দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দণ্ডে কারাগারে যাওয়া কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে জামিন দিয়েছে আদালত। রবিবার সকালে কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে তাকে জামিন দেয়া হয়।
আরিফুল ইসলামের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাখাওয়াত হোসেন জানান, ২৫ হাজার টাকা জামানত রেখে আরিফকে জামিন দেয়া হয়েছে। তবে আরিফের বড় বোন রিমা আক্তার জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে জামিনের বিষয়টি তারা মেনে নিতে পারছেন না। তারা আরিফের জামিন আবেদন করেননি। তারা আরিফের জামিন চান না, নিঃশর্ত মুক্তি চান।
এদিকে বাংলা ট্রিবিউনের এই জেলা প্রতিনিধিকে মধ্যরাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতে কারাদণ্ড দেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ১৭ জনকে রিটে বিবাদী করা হয়।
রবিবার বাংলা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদের পক্ষে আইনজীবী ইশরাত হাসান জনস্বার্থে রিটটি দায়ের করেন।
ইশরাত হাসান বলেন, ‘বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি সরদার মো. রশিদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি হতে পারে।’
এছাড়াও রিটে ফৌজদারি কার্যবিধি, ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এবং সংবিধানের ৩১,৩২,৩৫ এবং ৩৬ অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘনের বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
গত শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে কুড়িগ্রামের বাংলা ট্রিবিউনের জেলা প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে মাদকবিরোধী অভিযানে আটক এবং পরে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানের সময় মাদকসহ আরিফুল ইসলামকে আটক করা হয় বলে দাবি করেছেন অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা। তবে, আরিফুল ইসলামের স্ত্রী মোস্তারিমা সরদার বলেছেন, ‘মধ্যরাতে বাড়ির দরজা ভেঙে ঢুকে আরিফকে পেটানো, জোর করে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। কোনো মাদক পাওয়া যায়নি।’
‘মাদকবিরোধী অভিযানের’ উদ্যোগ জেলা প্রশাসন নাকি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কুড়িগ্রাম জেলা কার্যালয় নিয়েছিল, তা নিয়ে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক ও জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালকের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।
রাতের বেলায় সাংবাদিককে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সাংবাদিক সমাজ।