করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভারত সরকার ১৩ মার্চ বিকালে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশের পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। আর গতকাল (১৪ মার্চ) নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বাংলাদেশ সরকার। এর মধ্যেই ভারতীয় পাসপোর্ট যাত্রীরা ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াত করছে।
আজ রোববার ভারত থেকে বাংলাদেশে ঢুকেছেন অন্তত ৮৩ জন।
বেনাপোলের একাধিক সূত্র জানায়, ভারত সরকার বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রীদের ভারতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় ১৪ মার্চ থেকে কোনো বাংলাদেশি যাত্রীকে বেনাপোল ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারতে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। কিন্তু ভারত থেকে ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে প্রবেশে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে কোনো বাধা দেয়া হয়নি।
গতকাল রাতে বাংলাদেশ সরকার একমাত্র যুক্তরাজ্য ছাড়া আর সব দেশে থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ ৩১ মার্চ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ঘোষণা করেন, ইউরোপ এবং যেসব এলাকায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত বেশি, সেসব দেশের লোকদের বাংলাদেশে আসা বন্ধ, একমাত্র ইংল্যান্ড ছাড়া। একই সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো দেশ থেকে কেউ এলে তাকে দুই সপ্তাহ বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষিত চারটি সিদ্ধান্তের মধ্যে দ্বিতীয়টি হলো, যেসব দেশ ইতোমধ্যে বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেসব দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে ৩১ মার্চ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা থাকবে। ভারতীয় নাগরিকদের ক্ষেত্রেও এ সিদ্ধান্ত প্রযোজ্য হবে।
কিন্তু এই ঘোষণা কার্যকরের কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি বেনাপোলে। আজ বাংলাদেশে ঢোকা ৮৩ জনের মধ্যে ২৫ জন ভারতীয় পাসপোর্টধারী। বাকি ৫৮ জন বাংলাদেশের।
এর আগে গতকাল ৩ হাজার ১০০ জন বাংলাদেশি নাগরিক ভারত থেকে বাংলাদেশে ঢোকেন। আজ অবশ্য এক লাফে তা শতের নিচে নেমে এসেছে। তবে আসা বন্ধ হয়নি।
ভারতীয় নাগরিকদের এভাবে বাংলাদেশে ঢোকার কারণে যেকোনো সময় করোনাভাইরাস বেনাপোল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশে ঝুঁকির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারতে ইতিমধ্যে অর্ধশত করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়েছে। একজনের মৃত্যুর খবরও জানা গেছে। এ ছাড়া শনিবার সীমান্তের কাছের শহর ভারতের বনগাঁয় করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হওয়ার পর বেনাপোল চেকপোস্ট এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ভারতীয় নাগরিক দেশে ঢোকার বিষয়ে জানতে চাইলে বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহসান হাবিব বলেন, ভারতীয় পাসপোর্ট যাত্রীদের প্রবেশে বাংলাদেশ সরকারের কোনো নির্দেশনা না থাকায় তাদের বাংলাদেশে ঢোকার অনুমতি দেয়া হচ্ছে। সরকারের নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।