ভিডিও বার্তায় বন্ধন আরও জোরদারের ঘোষণা দিলেন মোদি

নিজস্ব প্রতিবেদক

মোদি
ফাইল ছবি

গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক অনেক জোরদার হয়েছে জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, সামনে এই বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে।

তিনি জানান, ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্ণ হবে, ২০২২ সালে ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকী। এই দুটি মাইলফলক কেবল ভারত এবং বাংলাদেশের উন্নয়নকেই নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে না, দুই দেশের বন্ধনকেও জোরদার করবে।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুক্তির মহানায়ক’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এক ভিডিও বার্তায় মোদি এসব কথা বলেন।

বক্তব্যের শুরুতে ১৩০ কোটি ভারতীয় জনগণের পক্ষে বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান নরেন্দ্র মোদি।

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা আমাকে ব্যক্তিগতভাবে এই ঐতিহাসিক সমারোহে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে আমার পক্ষে অংশ নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে তিনি নিজেই একটি বিকল্প প্রস্তাব দেন। সে কারণে আমি এই ভিডিওর মাধ্যমে আপনার সাথে সংযুক্ত হচ্ছি।’

বঙ্গবন্ধুকে গত শতাব্দীর মহান ব্যক্তিত্বদের মধ্যে অন্যতম উল্লেখ করে মোদি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু মানে একজন সাহসী নেতা, একজন দৃঢ়চেতা মানুষ, একজন ঋষিতুল্য শান্তিদূত, একজন ন্যায়, সাম্য ও মর্যাদার রক্ষাকর্তা একজন পাশবিকতা বিরোধী এবং যেকোনো জোরজুলুমের বিরুদ্ধে ঢাল। তার এই গুণ লাখ লাখ তরুণকে বাংলাদেশের মুক্তির জন্য সমস্ত প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে নতুন শক্তি দিয়েছিল। আজ আমার খুব ভালো লাগে, যখন দেখি যে বাংলাদেশের মানুষ তাদের প্রিয় দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলায়’ রূপান্তরিত করার জন্য দিন-রাত কাজ করে চলেছেন।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন, ঘৃণা এবং নেতিবাচকতা কখনোই কোনো দেশের উন্নয়নের ভিত্তি হতে পারে না। কিন্তু তার এই ধারণা এবং প্রচেষ্টা কিছু লোক পছন্দ করেনি। তারা আমাদের কাছ থেকে বঙ্গবন্ধুকে কেড়ে নিয়েছিল। তবে বাংলাদেশ এবং আমরা ভাগ্যবান যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা ঈশ্বরের আশীর্বাদে রক্ষা পেয়েছিলেন।’

বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করে মোদি বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যেভাবে উন্নয়নমুখী নীতিমালা অনুসরণ করে এগিয়ে চলছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। অর্থনীতি থেকে শুরু করে অন্যান্য সামাজিক সূচক, যেমন: ক্রীড়াক্ষেত্র কিংবা দক্ষতা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী ক্ষমতায়ন, মাইক্রোফিনান্সের মতো অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নতি করেছে।’

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উঠার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘গত ৫-৬ বছরে ভারত এবং বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি সোনালি অধ্যায় রচনা করেছে। উভয় দেশের মধ্যে আস্থার কারণেই আমরা স্থল ও সমুদ্র সীমানার মতো জটিল সমস্যাগুলো সহজে সমাধান করতে পেরেছি।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যৌথ ঐতিহ্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, লালন শাহ, জীবনানন্দ দাশ এবং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মতো মনীষীরা। বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার ও অনুপ্রেরণা আমাদের এই ঐতিহ্যকে আরও বিস্তৃত করেছে। তার আদর্শ ও মূল্যবোধের সাথে ভারত সবসময় সংযুক্ত ছিল। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার গভীর সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে এই এই অভিন্ন ঐতিহ্যের ভিত্তিতে। আমাদের এই ঐতিহ্য, আত্মিক বন্ধন, বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ, এই দশকেও দুই দেশের অংশীদারিত্ব, অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধির এক শক্তিশালী ভিত্তি।’

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে