চসিকসহ সব নির্বাচন স্থগিত রাখার দাবি বিএনপির

মত ও পথ প্রতিবেদক

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রামণের কারণে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনসহ (চসিক) পাঁচ আসনের উপনির্বাচন আপাততঃ স্থগিতের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে দেশের আদালতসমূহে ‘যতদিন প্রয়োজন’ বন্ধের দাবি জানিয়েছে দলটি।

করোনাভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানান। বিকেল সাড়ে ৫টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ জরুরি সংবাদ সংম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, কিছু আগে নির্বাচন কমিশন বলছে যে, ২১ তারিখে যে নির্বাচন আছে তা হবেই এবং ২৯ তারিখের নির্বাচনের ব্যাপারে ২১ তারিখ সিদ্ধান্ত হবে। আমরা এটাকে একেবারেই একপেশে সিদ্ধান্ত মনে করি এবং জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক বিবর্জিত, দুর্যোগের সময়ে কমিশন অমানবিক আচরণ করছে।

তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি যে, কমিশন তাদের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাহার করে জনগণের স্বার্থে, মানুষের বেঁচে থাকার স্বার্থে নির্বাচন আপাততঃ স্থগিত রাখবেন। পরবর্তিতে নির্বাচনে তারিখ ঘোষণা করা যেতে পারে।

মির্জা ফখরুল বলেন, এমনিতে ৮-৯ শতাংশের ভোটারের (যেটা গত নির্বাচনে দেখেছি) বেশি আসবে না। সেই ক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের কারণে ভোটাররা কত পারসেন্ট আসবে, ভোটের টার্ন আউট কী হবে সেটা আমরা সবাই অনুমান করতে পারি।

তিনি বলেন, আমি যে রিপোর্টটা পেয়েছি যে, ৩০ বিচারক ইতিমধ্যে কোয়ারেন্টাইনে গেছেন। ৩০ বিচারক যদি কোয়ারেন্টাইনে যান, সে ক্ষেত্রে এটা পরিস্কার আদালতে এ ভাইরাসের সংক্রমণ বেশি হচ্ছে। আমরা সে কারণে আহ্বান জানাচ্ছি যে, এমন পরিস্থিতি বিবেচনা করে, জনগণের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে আদালতগুলো আপাতত কিছু দিন বন্ধ রাখা প্রয়োজন। আমরা আশা করব, সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা দেশের কথা চিন্তা করে, জনগণের কথা চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।

ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী বলেছেন যে, প্রয়োজন হলে সব শাটডাউন করা হবে, যা যা দরকার সব বন্ধ করা হবে। এখন তো শাটডাউন করার জায়গাটা অলরেডি এসে গেছে। কারণ শাটডাউন না করলে যেভাবে ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করেছে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। বাংলাদেশ এমনিতেই ঘনবসতিপূর্ণ। দেশে এ ধরনের একটা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে, এখন বাইরের থেকে আসার দরকার হবে না, এটা দেশের অভ্যন্তরে যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের দ্বারা সব জায়গায় ছড়াবে।

ভাইরাস সংক্রমকদের চিকিৎসায় বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্ধারণ, সংক্রামক শনাক্তকরণসহ চিকিৎসক-নার্সদের প্রয়োজনীয় পোষাক (পিপিই) ও যন্ত্রপাতি কোনো কিছুর ব্যবস্থা সরকার করতে পারেননি বলে অভিযোগও করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ২১ মার্চ ঢাকা-১০, গাইবান্ধ-৩ এবং বাগেরহাট-৪ আসনের উপনির্বাচন, বগুড়া ও যশোরের উপনির্বাচন এবং চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে