গত ২৪ ঘণ্টায় মালয়েশিয়ায় আরও ১১০ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯০০। এছাড়া মৃত্যু হয়েছে ২ জনের।
এমতাবস্থায় দেশটিতে ৬ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। যদিও বাংলাদেশিদের কেউ এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। তবুও তারা চরম আতঙ্কে দিন পার করছেন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ১৮ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করায় মালয়েশিয়ার পথঘাট এখন জনশূন্য। সব জায়গায় সুনসান নীরবতা। এ অবস্থায় দেশটিতে অবস্থান করা প্রায় ৬ লাখ বাংলাদেশি অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন।
এদিকে মালয়েশিয়া সরকার ঘোষিত ‘লকডাউন’ সময়ে শ্রমিকদের বেতন দিতে নির্দেশনা প্রদান করেছে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়। সরকার ঘোষিত এই বন্ধের আদেশের দিনগুলোতে শ্রমিকদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা প্রদান করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে নিয়োগদাতা ও মালিক পক্ষকে।
মানবসম্পদ মন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান বলেছেন, চলমান নিষেধাজ্ঞা আদেশের অধীনে ৩১ মার্চ পর্যন্ত শ্রমিকদের বেতন পাওয়ার অধিকার রয়েছে। সরকার ঘোষিত এই বন্ধের আদেশের দিনগুলোতে শ্রমিকদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা প্রদান করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
গত সোমবার মালয়েশিয়ায় লকডাউন ঘোষণার পর থেকে দেশের বাসিন্দাদের একের পর এক ফেসবুক পোস্ট দিয়ে সতর্ক করে যাচ্ছে দেশটির পুলিশ বিভাগের বিভিন্ন ইউনিট। জনগণের প্রতি বার্তা সংবলিত একটি ছবিতে দেখানো হয়েছে যে আমি আপনার দায়িত্বে আছি, আপনি আমার জন্য ঘরে থাকুন।
শুধু পুলিশ নয় মালয়েশিয়ার সরকারি অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, স্বেচ্ছাসেবী ডাক্তার, নার্স এসব ছবি সংবলিত বার্তা জনগণের উদ্দেশ্যে প্রচার করে যাচ্ছেন। দেশের এই অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় লকডাউন কর্মসূচির অংশ হিসেবে যে যার অবস্থানে থেকে দেশ রক্ষার কাজে অংশ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এর আগে, মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আধাম বাবা বলেন, নতুন করে যে ১১০ জন আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে ৬৩ জন দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুরে অবস্থিত জামেক পেতালিং মসজিদে এক তাবলীগ জমায়েতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মার্চ ও জমায়েত হয়।
করোনা প্রতিরোধে মালয়েশিয়া সরকার নতুন নতুন আদেশ জারি করে বন্ধ করে দিচ্ছে একের পর এক প্রতিষ্ঠান। হাসপাতাল, ফার্মেসি ও সুপারশপ ছাড়া সবকিছুই সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। সর্বসাধারণের চলাফেরা নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিনা কারণে ঘর হতে বের হওয়ায় ইতোমধ্যে বেশ কয়েক জনকে জরিমানাও করা হয়েছে।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক হিসেবে এখনো স্বীকৃত কোনো ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়ায় এর প্রতিকার সম্ভব হচ্ছে না। ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সবার সচেতনতার বিকল্প নেই বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রসঙ্গত, ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনা ভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে। প্রতিনিয়ত এই ভাইরাসে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এখনো কোনো টিকা বা প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেনি বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা (ডব্লিউএইচও)।