বিশ্বব্যাপী তাণ্ডব চালাচ্ছে প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিহত হয়েছেন ১৩৬৭ জন। এর মধ্যে ইতালিতেই মৃত্যু হয়েছে ৬২৭ জনের। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০ হাজার ৯৩৮ জন নতুন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৩৯৮ জন।
অপরদিকে ৯১ হাজার ৯১২ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। শুক্রবার পর্যন্ত বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ ৭৫ হাজার ৮৭১ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুতে ইতালির পরই রয়েছে স্পেন। সেখানে মৃত্যু হয়েছে ২৬২ জনের। দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা ১০৯৩ জন। এছাড়া জার্মানিতে মৃত্যু হয়েছে ৬৮ জনের। ইরানে গত ২৪ ঘন্টায় নিহত হয়েছেন ১৪৯ জন। দেশটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১৪৩৩ জন।
চীনের উহান থেকে বিস্তার শুরু করে গত আড়াই মাসে বিশ্বের ১৭৩টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। চীনে করোনার প্রভাব কিছুটা কমলেও বিশ্বের অন্য কয়েকটি দেশে মহামারি রূপ নিয়েছে।
এই ভাইরাসে শুধুমাত্র চীনের মূল ভূখণ্ডেই আক্রান্ত হয়েছেন ৮১ হাজার ৮ জন। আর মারা গেছেন ৩ হাজার ২৫৫ জন। তবে এখন চীনে এই হার উল্লেখযোগ্য হারে কমে এসেছে। গত তিনদিনে দেশটিতে করোনাভাইরাসে নতুন করে কেউই আক্রান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে চীন। দেশটি জানিয়েছে, শুক্রবারও ৪১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে তবে তারা কেউই চীনের ভেতরের নয়, তারা সবাই চীনে অন্য দেশ থেকে প্রবেশ করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নিহত হয়েছেন ৭ জন।
চীনের বাইরে ইতালিতে ভয়াবহ তাণ্ডব চালাচ্ছে করোনাভাইরাস। সেখানে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭ হাজার ২১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৪০৩২ জনের।
- আরও পড়ুন >> ধানের শীষের ৮৫০ এজেন্টকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। নিউমোনিয়ার মত লক্ষণ নিয়ে নতুন এ রোগ ছড়াতে দেখে চীনা কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সতর্ক করে। এরপর ১১ জানুয়ারি প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। ঠিক কীভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়েছিল- সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নন বিশেষজ্ঞরা। তবে ধারণা করা হচ্ছে, উহানের একটি সি ফুড মার্কেটে কোনো প্রাণী থেকে এ ভাইরাস প্রথম মানুষের দেহে আসে। তারপর মানুষ থেকে ছড়াতে থাকে মানুষে।
করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।