কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পর খালেদা জিয়াকে গুলশানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রায় সাড়ে ২৫ মাস পর ‘ফিরোজা’য় পা রাখলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি এই বাসা থেকেই কারাগারে গিয়েছিলেন তিনি।
বুধবার বিকাল সোয়া পাঁচটায় খালেদা তার গুলশানের বাসায় পৌঁছেন। এর আগে বিকাল সোয়া চারটার দিকে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাসার উদ্দেশে রওয়ানা করেন।
ছোটভাই শামীম ইস্কান্দার নিজে ড্রাইভিং করে খালেদা জিয়াকে বাসায় নিয়ে যান। তার জিম্মাতেই মুক্তি দেয়া হয়েছে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে ছিলেন খালেদা জিয়া। । গত বছরের এপ্রিল থেকে কারাবন্দি খালেদা বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
খালেদা জিয়া মুক্তি পাচ্ছেন এই খবর পাওয়ার পরই গতকাল থেকে প্রস্তুত হতে থাকে বাসভবন ফিরোজা। রান্নাঘর, থাকার ঘর, বসার ঘর, বারান্দা, বাসার লন, দরজা-জানালা, বিছানাপত্র, বাথরুম, ফ্যান-এসি, পর্দা-যা কিছু আছে, সব কিছু ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করা হয়। বাসার সামনে-পেছনের বাগান, খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএসফের গাড়ি-সব ধুয়ে-মুছে পলিশ করা হয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আতঙ্কে দেশ যখন প্রায় অচল তখন হঠাৎ করেই গতকাল আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, সাজা ছয় মাসের জন্য মওকুফ করে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে যাচ্ছে সরকার। মানবিক দিক বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এই মুক্তি দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী।
আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর বুধবার বিকালে ছাড়া পান বিএনপি চেয়ারপারসন। এ সময় দলটির শত শত নেতাকর্মী ভিড় করেন হাসপাতালে। যদিও করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে হাসপাতালে ভিড় না করতে আহ্বান জানিয়েছিলেন বিএনপি মহাসচিব, তবে নেতাকর্মীরা তা উপেক্ষা করেই ছুটে যান তাদের নেত্রীকে একনজর দেখতে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় পরিস্থিতি সামাল দিতে।
বর্তমানে খালেদা জিয়া নিজ বাসভবন ‘ফিরোজা’তেই থাকবেন বলে জানা গেছে। সেখানেই চলবে তার চিকিৎসা। বিদেশ না যাওয়ার শর্তে সরকার তাকে মুক্তি দিয়েছে।