দেশে তৈরি পিপিই সরবরাহ শুরু হতে আরো এক সপ্তাহ

বিশেষ প্রতিনিধি

দেশে তৈরি পিপিই

করোনা ভাইরাস ঠেকাতে এখন বহুল আলোচিত ইস্যু চিকিৎসক ও এ সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিতদের সুরক্ষা পোশাক ও সরঞ্জাম বা পিপিইর সংকট। আমদানিনির্ভর পিপিই দেশেই তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছেন কিছু গার্মেন্টস উদ্যোক্তাসহ এনজিও, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। তবে এ পোশাকের ডিজাইনসহ বিভিন্ন করোনা প্রতিরোধী হিসেবে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমোদন পেতে কিছুটা সময় লেগে গেছে। স্বেচ্ছাশ্রমের এ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িতরা জানিয়েছেন, পিপিই বিতরণ পর্যায়ে যেতে আরো সপ্তাহখানেক সময় প্রয়োজন হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, পিপিইর জন্য ফেব্রিকসহ ডিজাইন অনুমোদন পেতে আবেদনের পর তিন দিন সময় লেগেছে। তবে অনুমোদনের পর কয়েকটি কারখানায় পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে। এতে এগিয়ে এসেছে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত কয়েকটি কারখানা।

প্রাথমিকভাবে অন্তত ২৫ হাজার পিপিই তৈরি হবে। এর পর ধাপে ধাপে এ সংখ্যা আরো অনেক বাড়বে। কারখানাগুলো এসব পোশাক বানানোর জন্য কোনো অর্থ নেবে না। অন্যদিকে ফেব্রিক ক্রয়ের জন্য কিছু গার্মেন্টস মালিক, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আর্থিকভাবে সহযোগিতা করছে। সবমিলিয়ে এসব পিপিই চিকিৎসকদের জন্য বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে।

এসব পোশাক প্রস্তুতের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে তুসুকা গ্রুপের একটি কারখানা। তুসুকা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বিজিএমইএর সহসভাপতি আরশাদ জামাল দিপু গণমাধ্যমকে বলেন, এ ধরনের পোশাকের জন্য বিশেষায়িত কাপড়ের প্রয়োজন হয়। ওয়ান নাইনটি টি টাফেডা কাপড় যা শতভাগ পলিয়েস্টার। এসব কাপড়ের জোগানও চ্যালেঞ্জিং। তবে অনেক উদ্যোক্তা এগিয়ে এসেছেন। গতকালও বন্দরে এ ধরনের কাপড়ের চালান খালাস হয়েছে। সবমিলিয়ে এটি হাতে আসতে এক সপ্তাহ সময় লাগবে।

এ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িতরা জানিয়েছেন, যে পিপিই তৈরি হচ্ছে, তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) শতভাগ মান হয়তো পূরণ করে না। কিন্তু এর মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে। কেননা ডাক্তারদের বাইরেও চিকিৎসাসেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের বড়ো অংশের জন্যও পোশাকের প্রয়োজন রয়েছে। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা পিপিই মূল চিকিৎসকদের জন্য সরবরাহ করা হলেও এর সঙ্গে যুক্ত অন্যরা দেশে উৎপাদিত এসব পিপিই থেকে উপকৃত হবেন।

এ কার্যক্রমে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী ও মোহাম্মদী গ্রুপের পরিচালক নাভিদ উল হক গতকাল মত ও পথকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ২০ থেকে ২৫ হাজার পিপিই তৈরি করা হচ্ছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এটি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। তবে একবার সরবরাহ পর্যায়ে গেলে পরবর্তী ধাপে আরো বেশি হারে তৈরির কাজ দ্রুত এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। তিনি বলেন, এই পিপিই ডব্লিউএইচও’র শতভাগ মান অনুযায়ী না হলেও করোনার বিদ্যমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহায়ক হবে। কাপড় হুবহু এক না হলেও এটি শতভাগ পানিরোধী। অর্থাৎ করোনা ভাইরাস রোধে এই ডিজাইন ও ফেব্রিকের পিপিই কাজে দেবে।

উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের কারণে গতকালই বিজিএমইএ থেকে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের ধরে রাখাও কঠিন হবে। ফলে তা কিছুটা চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে