দুই বছর পর এমন সময় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পেলেন যখন দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের আতঙ্ক। নিজের নিরাপত্তা ও সংক্রামণ এড়াতে সবাইকে বাসায় অবস্থানের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এমন বাস্তবতায় মুক্তি মিললেও তার আশপাশে আপাতত থাকছেন না পরিবারের কেউ। জেলজীবনের একমাত্র সঙ্গী গৃহপরিচারিকা ফাতেমা বেগমই থাকছেন তাঁর পাশে।
তবে গুলশানের বাসা ফিরোজায় এতদিন সেইভাবে কোনো কাজ না থাকলেও এখন তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী (সিএসএফ) সহ বাসার অন্যান্য কাজের লোকজন রয়েছেন।
গত বুধবার সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তির পর হাজার হাজার নেতাকর্মী তার গাড়ি বেষ্টন করে রেখেছিল পুরো পথে। তাই পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে আপাতত ১৪ দিন খালেদা জিয়া বাসায় কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়। এই অবস্থায় একান্ত প্রয়োজন না হলে কেউ তার কাছে যাবেন না। তবে ফাতেমা থাকছেন সার্বক্ষণিক।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসার প্রয়োজনে শুধু ডাক্তার, তার দেখভালের জন্য বোন সেলিমা ইসলাম এবং ভাইয়ের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা ফিরোজায় যাতায়াত করতে পারবেন। এর বাইরে কোনো পর্যায়ে নেতারাও যাবেন না সেখানে।
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, তিনি ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন বলে জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুস সাত্তার।
তিনি বলেন, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) সবার কাছে নিজের সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন। সুস্থ হওয়ার পরেই সবার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করবেন। নেতাকর্মীদের তার বাড়ির সামনে ভিড় না করতে বলেছেন।
খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার গণমাধ্যমকে বলেন, আমরাই তার সুরক্ষার জন্য আপাতত প্রয়োজন না হলে যাচ্ছি না। ফাতেমা এখন আছে, থাকবে। কোয়ারেন্টাইন শেষে চিকিৎসাসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে কাজ করবো।
জানা গেছে, মুক্তি পেয়ে বাসায় যাওয়ার পর বুধবার রাতে পরিবারের কেউ কেউ গুলশানের বাসায় ছিলেন। বৃহস্পতিবার সবাই চলে আসেন। ওই রাতে লন্ডনে থাকা ছেলে, দুই পুত্রবধূ ও নাতনিদের সঙ্গে কথা বলেছেন খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়ার জন্য বাসায় রান্না হবে জানিয়ে তার ব্যক্তিগত একজন কর্মকর্তা বলেন, যারা এখন তার কাছে আসবেন তাদের জন্যও ঝুঁকি থাকবে। তার নিজের জন্যও ঝুঁকি। তাই আপাতত কিছুদিন এভাবেই চলবে। চাইলে পরিবারের পক্ষ থেকে তার পছন্দের কিছু রান্না করে নিয়ে আসবেন। তবে বাসায় রান্না হবে।
- আরও পড়ুন >> করোনায় আক্রান্ত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা হয়। এরপর আদালতের নির্দেশেই তার সঙ্গে কারাগারে গৃহপরিচারিকা রাখার সুযোগ পান ফাতেমা বেগম নামের দীর্ঘদিনের এই গৃহপরিচারিকা। মুক্তির আগ পর্যন্ত কারাগার থেকে হাসপাতাল সবখানেই ছিলেন ফাতেমা। বুধবার খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে মুক্তি মেলে ফাতেমারও।