বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রভাবে গভীর সংকটকাল অতিক্রম করছে তৈরি পোশাক খাত। এক হাজারের বেশি ক্রয়াদেশ বাতিল হওয়ায় এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা যখন হতাশায় নিমজ্জিত তখন কিছুটা সুখবর পেলেন তারা। খ্যাতনামা বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে তারা তাদের বিদ্যমান ক্রয়াদেশ বহাল রাখছে। শিপমেন্টের অপেক্ষায় থাকা পণ্য নেয়ার ব্যাপারেও তারা ইতিবাচক ভূমিকা দেখিয়েছে।
ক্রেতাদের এমন সিদ্ধান্তের ফলে করোনার প্রভাবে যে ৩০০ কোটি ডলারের পোশাক ক্রয়াদেশ স্থগিত বা বাতিলের কথা বলা হচ্ছিল, এখন সেই পরিমাণ কমে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বুধবার রাতে এক হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, এইচএন্ডএম, ইন্ডিটেক্স, পিভিএইচ, টার্গেট এবং কিয়াবির মতো ক্রেতারা আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। তারা তাদের ক্রয়াদেশ বহাল রাখার কথা জানিয়েছে। আগামী মঙ্গলবার সিএন্ডএ আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে।
রুবানা হক বলেন, কেউ কেউ স্বাস্থ্যকর্মীদের পেশাদার পিপিই দেওয়ার জন্য তাদের একদিনের বেতন ডোনেট করার প্রস্তাব দিয়েছেন। আমরা আশা করি দীর্ঘকাল ধরে যারা আমাদের সঙ্গে আছেন, কঠিন এই দুঃসময়ে তারাও আমাদের সঙ্গে থাকবেন।
তিনি বলেন, আমাদের প্রতি সমর্থন দেওয়ায় তাদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। আশা করি অর্থ প্রদানে তাদের শর্তগুলো এই সময়ে শিথিল থাকবে।
এদিকে, সুইডেনের বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান এইচঅ্যান্ডএম গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তাদের অর্ডারগুলো বহাল রাখবে। বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা যেসব তৈরি পোশাক কারখানাকে পণ্য ক্রয়ের অর্ডার দিয়েছিলাম, সেগুলো বাতিল হচ্ছে না। আমরা আমাদের প্রতিজ্ঞা রক্ষা করব। অর্ডারগুলোর ডেলিভারি নেব। বাংলাদেশ থেকে সুইডিশ এই প্রতিষ্ঠান বেশ বিপুল পরিমাণ তৈরি পোশাক কিনে থাকে।
- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় সংকটে বিশ্ব: অ্যন্তোনিও গুতেরেস
- করোনা প্রতিরোধে কাল থেকে কঠোর হচ্ছে সেনাবাহিনী
এর আগে বিজিএমইএ জানিয়েছিল, এক হাজার ৮২টি কারখানার ক্রয়াদেশ বাতিল করেছেন ক্রেতারা। যেখানে অর্ডার ছিল ৯৩২ দশমিক ৬৩ মিলিয়ন পিস পোশাকের, যার মূল্য ২৯৫ কোটি মার্কিন ডলার।
একের পর এক ক্রয়াদেশ বাতিল হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক গণমাধ্যমকে জানান, করোনার কারণে পোশাক খাতে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে এসেছে। বিভিন্ন দেশ ও মহাদেশ থেকে ক্রেতারা তাদের সব ক্রয়াদেশ (অর্ডার) আপাতত বাতিল করছেন। আমরা তাদের কাছে জানিয়েছি আমাদের এ দুঃসময়ে তারা যেন পাশে থাকে। তিনি জানান, বাতিল হয়ে যাওয়া ক্রয়াদেশগুলো ফিরে পেতে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।