গত এক মাসে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ‘হটস্পট’ হয়ে উঠেছে ইউরোপ। এ অঞ্চলের দেশগুলোতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি, প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। খুব শিগগিরই এটি নিয়ন্ত্রণে আনা না গেলেও লকডাউনের মতো কড়াকড়ি আরোপ করায় অন্তত ৫৯ হাজার মানুষের প্রাণরক্ষা হয়েছে বলে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে।
যুক্তরাজ্যের ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের একদল গবেষক ইউরোপের ১১টি দেশে গত ২৮ মার্চ পর্যন্ত করোনা সংক্রমণের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তাদের মতে, লকডাউন ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কারণে শুধু ইতালিতেই ৩৮ হাজার মানুষের প্রাণ বেঁচে গেছে। স্পেনে প্রাণরক্ষা হয়েছে ১৬ হাজার ও ফ্রান্সে ২ হাজার ৬০০ জনের।
মূলত কোনো দেশে কতদিন ধরে লকডাউন চলছে তার ওপর নির্ভর করছে প্রাণরক্ষার এই সংখ্যাটি। তাছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা যেসব দেশে কম, সেখানে প্রাণরক্ষার সংখ্যাও কম। যেমন- নরওয়েতে প্রাণ বেঁচেছে মাত্র ১০ জনের, ডেনমার্কে ৬৯ জনের। যুক্তরাজ্যে লকডাউনে প্রাণরক্ষা হয়েছে ৩৭০ জনের।
গবেষণায় দেখা গেছে, গত ২৮ মার্চ পর্যন্ত ইউরোপের দেশগুলোতে অন্তত ৪ কোটি ৩০ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অর্থাৎ এ মহাদেশের জনসংখ্যার হিসাবে আক্রান্তের সংখ্যা ১১ দশমিক ৪ শতাংশ।
ইউরোপের মধ্যে করোনা সংক্রমণের হার সবচেয়ে কম নরওয়ে ও জার্মানিতে (০.৪১ শতাংশ ও ০.৭ শতাংশ)। এর হার সবচেয়ে বেশি স্পেনে (প্রায় ১৫ শতাংশ।)
ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা ইতালিতে হলেও বিপুল জনসংখ্যার কারণে সংক্রমণের হার কিছুটা কম সেখানে। দেশটিতে এপর্যন্ত ৯ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন. সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যে লকডাউনসহ বিভিন্ন কড়াকড়ি আরোপের কারণে করোনাভাইরাসের বিস্তার কম হয়েছে গড়ে ৬৪ শতাংশ।
গবেষণায় অংশ নেয়া প্রফেসর ক্রিস্টল ডনেলি বলেন, এই প্রতিবেদনটিই সামাজিক দূরত্বের সুবিধাগুলোর সুস্পষ্ট প্রমাণ দেয়। একে অপর থেকে দূরত্ব বজায় রেখে আমরা ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়া, অসুস্থতার ঝুঁকি হ্রাস, এমনকি আমাদের চারপাশে মৃত্যুর সংখ্যাও কমিয়ে আনতে পারি।
সূত্র : দ্য টেলিগ্রাফ