ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লির নিজামুদ্দিন এলাকার মসজিদে আয়োজিত তাবলিগ জামাতে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে গত দুইদিনে ৬৪৭ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব লাভ আগারওয়াল বলেন, ‘তাবলিগ জামাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে গত দুইদিনে ৬৪৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আমরা যদি গত কয়েকদিনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার বিষয়টি দেখি, তাহলে প্রাথমিকভাবে বোঝা যাচ্ছে যে, তা নির্দিষ্ট একটি স্তরে বৃদ্ধির কারণে ঘটেছে।’
দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আরও জানান, ‘দিল্লির ওই তাবলিগ জামাত থেকে দেশের ১৪টি রাজ্যে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া ওই তাবলিগ জামাতের সঙ্গে যুক্ত অন্তত ১২ জন ইতোমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।’
গত মার্চের মাঝামাঝি সময়ে মার্কাজ নিজামুদ্দিনের ওই তাবলিগ জামাতে ভারত ছাড়াও অন্যান্য দেশ থেকে কয়েক শত মুসল্লি অংশ নেন। ছিলেন বাংলাদেশের মুসল্লিও। সব মিলিয়ে প্রায় ৯ হাজার মানুষ যোগ দিয়েছিলেন ওই সমাবেশে। ভারতের অনেক রাজ্য সরকার ওই সমাবেশে যোগ দেওয়া ব্যক্তিদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে।
ভারতের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি হয়েছে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাডুতে। যারা ওই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন তাদের মধ্যে ২৬০ জন রাজ্যটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া দিল্লির ২৫৯ জন করোনা আক্রান্তও ওই তাবলিগ জামাতে যোগ দিয়েছিলেন।
শুক্রবার উত্তরপ্রদেশে ১৭২ জনের দেহে নতুন করে করোনার উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪২ জনই দিল্লির ওই তাবলিগ জামাতের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। এদিকে অন্ধ্রপ্রদেশের ১৪০ জন আক্রান্তের মধ্যে ১০৮ জনই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। রাজস্থানে সংখ্যাটা ২৩ জন।
এদিকে গত ১৮ মার্চ তেলেঙ্গানায় এক ইন্দোনেশিয়ান ব্যক্তির দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। তিনিও ওই সমাবেশে গিয়েছিলেন। এর কিছুদিন পর একটি চিঠিতে ওই দলের সদস্যদের বিস্তারিত বিবরণ রাজ্যগুলোর কাছে পাঠিয়ে তাদের খুজে বের করে করোনা পরীক্ষার নির্দেশ দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
এছাড়া কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জেও দিল্লির ওই তাবিলগ জামাতে অংশ নেয়া কিংবা তাদের সংস্পর্শে আসা মানুষের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কথা জানা গেছে। কাশ্মীরে প্রথম যে মৌলানা করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনিও ওই তাবলিগ জামাতের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ছিলেন।