আশা করছি এপ্রিলেই শ্রমিকরা বেতন পাবেন: ফজলে কবির

মত ও পথ প্রতিবেদক

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার যে প্যাকেজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন সেটা বিতরণের গাইডলাইন করা হয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেছেন, আমরা আশা করি এপ্রিলের বেতন শ্রমিকরা এপ্রিল মাসের শেষেই পাবেন।

রোববার গণভবনে করোনা পরিস্থিতিতে সংকট কাটিয়ে উঠতে সরকারি প্রণোদনার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার বক্তব্যের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেন প্রধানমন্ত্রী।

গভর্নর ফজলে কবির বলেন, রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক কর্মচারির জন্য যে ৫ হাজার কোটি টাজার প্যাকেজ, তা দিয়ে শ্রমিকদের এপ্রিল, মে ও জুন মাসের স্যালারি প্রদান করা হবে। সেটির সম্পূর্ণ ডিজাইন-গাইডলাইন ইস্যু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। আশা করছি এপ্রিল মাসের শেষ তারিখেই শ্রমিক কর্মচারিরা পেয়ে যাবেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কথায় এটা পরিস্কার হলো যে তারা দ্রুত এ টাকা ছাড় দেয়ার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছেন। যদিও গতকাল এ টাকার দ্রুত ছাড় পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি।

তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ড. রুবানা হক গতকাল শনিবার এক প্রশ্নের জবাবে রাত পৌনে ১২টার দিকে সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো এক অডিও বার্তায় বলেন, শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার সময় সাধারণত মাসের সাত কর্মদিবস, যেটা ১০ তারিখে ওভার হয়। প্রথমত, কোনো ব্যাংক এখন টাকা দিচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, নেগোশিয়েটিভ করতেও সময় লাগবে (৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল থেকে ঋণ পেতে)। সেক্ষেত্রে একটু যদি ১০ তারিখের যায়গায় ১৫ তারিখ যেন বিবেচনায় নেয়া হয়। তবে মার্চ মাসের বেতন প্রতিটি শ্রমিক পাবেন, এই নিশ্চয়তা দিতে পারি।

গাইডলাইনে যা আছে-

বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালায় বলা আছে- ঋণের অর্থ দিয়ে কেবল শ্রমিক-কর্মচারীদের এপ্রিল, মে এবং জুন এ তিন মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাবে। সুদবিহীন এ ঋণে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ নিতে পারবে ব্যাংকগুলো। ঋণের সর্বশেষ কিস্তি নেওয়ার পর অর্থাৎ জুন ২০২০ মাসের বেতন/ভাতার বিপরীতে গৃহীত ঋণের পর ছয় মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ মোট দুই বছরে ১৮টি সমান কিস্তিতে ব্যাংককে সার্ভিস চার্জসহ সমুদয় ঋণ পরিশোধ করতে হবে। কোনো ঋণ গ্রহিতার ঋণের কিস্তি যথাসময়ে পরিশোধিত না হলে প্রচলিত নিয়মে ওই ঋণ শ্রেণিকরণ করতে হবে এবং ঋণ গ্রহিতা খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবে। এক্ষেত্রে বকেয়া কিস্তির ওপর ২ শতাংশ হারে দণ্ড সুদ আরোপ করা যাবে। ছয় মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ আর্থিক প্রণোদনা তহবিল হতে দেওয়া ঋণের সময়কাল হবে দুই বছর। গ্রেস পিরিয়ড অতিবাহিত হওয়ার পর সমান ১৮টি মাসিক কিস্তিতে ঋণের অর্থ ব্যাংকে পরিশোধ করতে হবে। যেসব কারখানা শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়মিত পরিশোধ করছেন, তারাই এই তহবিলের অর্থ পাওয়ার জন্য বিবেচিত হবে।

‘যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান মোট উৎপাদনের ন্যূনতম ৮০ শতাংশ রপ্তানি করে তাদের এ টাকা দেয়া হবে বলা নীতিমালায় বলা হয়েছে। আর রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রমাণের জন্য বাণিজ্য সংগঠনের প্রত্যয়নপত্র লাগবে। বেতনের অর্থ শ্রমিক-কর্মচারীর ব্যাংক হিসাবে লেনদেন করতে হবে। কোনো প্রকার নগদ লেনদেন করা যাবে না। যেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ব্যাংক হিসাব নেই তাদের মালিক নিজ উদ্যোগে ব্যাংক হিসাব খুলে দেবেন। এসব হিসাবে কোনো চার্জ আরোপ করতে পারবে না।’

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে