করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে নারায়ণগঞ্জ নগরীতে লক-ডাউন বা কারফিউ জারি করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
আজ রোববার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এ ব্যপারে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী গণমাধ্যমকে বলেন, নারায়ণগঞ্জে এরই মধ্যে করোনার প্রাদুর্ভাব বেশি বলে স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যে বলা হচ্ছে। এটি বাণিজ্যিক এলাকা হওয়ায় এখানে শ্রমিক বেশি। ঘনবসতি। মানুষের চলাচল এখনো বেশি। এই অবস্থায় এখানে লক-ডাউন বা কারফিউ জারি করলে অন্তত মানুষের ঘরে থাকার প্রবণতা বাড়বে।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও বলেছি। আশা করি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত পাবো।’ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাণিজ্যিক নগরী নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকায় এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাস দেখা দিয়েছে। দিন দিন সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করায় কয়েকটি এলাকা প্রশাসনের সহায়তায় লক ডাউন করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, সিটি এলাকায় ইপিজেড, গার্মেন্টস, হোসিয়ারিসহ ভারী শিল্প কল কারখানার পাশাপাশি চাল, ডাল, আটা, ময়দা, লবণসহ নিত্যপণ্যের পাইকারি বাজার রয়েছে বিধায় এলাকাটি শ্রমিক অধ্যুষিত। ফলে ঘনবসতিপূর্ণ এই নগরীতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি অত্যাধিক।
নগর কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দেওয়া ওই বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়, মানুষের জীবন রক্ষায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সবদিক বিবেচনায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী জরুরি ভিত্তিতে সিটি এলাকা লক-ডাউন বা কারফিউ জারি করার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেছেন।
প্রসঙ্গত, শনিবার (৪ এপ্রিল) সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার কাশীপর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সুচিন্তানগর এলাকার এক বাসিন্দা করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে রাতে সদর উপজেলার ইউএন নাহিদা বারিক ওই এলাকার তিনশ পরিবারকে লকডাউন ঘোষণা করেন।
তবে নারায়ণগঞ্জে প্রথম ৩০ মার্চ করোনা উপসর্গ নিয়ে ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে মারা যান নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার রসুলবাগ এলাকার পুতুল (৫০) নামের এক নারী। ঘটনার দুইদিন পর ২ এপ্রিল তার নমুনা পরীক্ষায় করোনা আক্রান্তের বিষয়টি শনাক্ত হয়।
এছাড়া নারায়ণগঞ্জে আরও এক ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছে। তিনি ঢাকার বাসিন্দা এবং মানিকগঞ্জের তাবলীগ জামাত থেকে ফিরে শনিবার নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকায় মেয়ের বাড়িতে এসে উঠেন। পরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে রাতে আইডিসিআর নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। রোববার দুপুরে তার করোনা টেস্টের রিপোর্টে পজেটিভ শনাক্ত হয়।
এখন পর্যন্ত দেশে মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৮৮ জন। মারা গেছেন ৯ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৩ জন।