বিশ্বব্যাপী মহামারির আকার নেয়া করোনাভাইরাসে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন এমন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮৮ জন। এদের মধ্যে ৫৪ জনই রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জেলাভিত্তিক করোনা রোগী শনাক্তের একটি তালিকায় রাজধানীর ৩০ এলাকার ৫৪ জন শনাক্তের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এই তালিকায় রাজধানীর বাসাবোতে ৯ জন, মিরপুরের টোলারবাগে ৬ জন, সোয়ারীঘাটে ৩ জন, বসুন্ধরায় ২ জন, ধানমন্ডিতে ২ জন, যাত্রাবাড়ীতে ২ জন, মিরপুর-১০ এলাকায় ২ জন, মোহাম্মদপুরে ২ জন, পুরানা পল্টনে ২ জন, শাহআলীবাগে ২ জন করে রয়েছেন।
এছাড়া আশকোনায় ১ জন, বুয়েট এলাকায় ১ জন, সেন্ট্রাল রোডে ১ জন, ইস্কাটনে ১ জন, গুলশানে ১ জন, গ্রীনরোডে ১ জন, হাজারীবাগে ১ জন, কাজীপাড়ায় ১ জন, লালবাগে ১ জন, মিরপুর-১১ এলাকায় ১ জন, মগবাজারে ১ জন, মহাখালীতে ১ জন, নিকুঞ্জে ১ জন, রামপুরায় ১ জন, শাহবাগে ১ জন, উর্দু রোডে ১জন, ওয়ারীতে ১ জন এবং উত্তরায় ১জন রোগী শনাক্ত হয়।
এদিকে রোববার দুপুরে করোনা সংক্রান্ত অনলাইন ব্রিফিংয়ে আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা রাজধানী ঢাকার মিরপুরের টোলাবাগ ও বাসাবো এলাকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি বলে উল্লেখ করেন।
এছাড়া তথ্য বিভ্রান্তি দূর করতে ঢাকার ভিতরে এবং বাইরে এলাকাভিত্তিক বিস্তারিত তথ্য আইইডিসিআরের এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের ওয়েবসাইটে দেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন।
ঢাকা ছাড়াও আইইডিসিআরের তালিকায় আরও দশ জেলায় করোনা রোগী শনাক্তের তথ্য উল্লেখ রয়েছে। মাদারীপুরে ১১ জন, নারায়ণগঞ্জে ১১ জন, গাইবান্ধায় ৫ জন এবং রংপুর, শরীয়তপুর, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, কুমিল্লা, চুয়াডাঙ্গা ও কক্সবাজারে ১ জন করে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে।
নতুন আক্রান্তদের বিষয়ে আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, আক্রান্ত ১৮ জনের মধ্যে বেশিরভাগই হলো আগে থেকে পাওয়া ভিন্ন ক্লাস্টারের অংশ। তার মানে হলো আমরা যেসব এলাকাগুলোকে ক্লাস্টারের অন্তর্ভুক্ত করেছি সেসব ক্লাস্টারগুলোতে তাদেরকে পেয়েছি। সুতরাং নতুন আক্রান্তরা সবাই ক্লাস্টারের (একজন রোগীকে কেন্দ্র করে তার পরিবারের সবার আক্রান্ত হওয়া) অংশ।
এজন্য আক্রান্ত এলাকায় রোগ যাতে অতিমাত্রায় ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য বিশেষ করে বাসাবো এবং টোলারবাগ এলাকাতে শুধু রোগী নয় রোগীর সংস্পর্শে যারা এসেছেন অথবা লক্ষণ উপসর্গ রয়েছে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার করার কথা জানিয়েছে আইইডিসিআর।
এদিকে অনেক এলাকা থেকে রোগী পাওয়ায় কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হলেও সেটা ক্লাস্টারভিত্তিক এলাকাগুলোতে সীমাবদ্ধ রয়েছে এখনও পর্যন্ত। জনসমাগম এড়িয়ে চলা সম্ভব হলে ক্লাস্টারভিত্তিক এলাকাগুলো থেকে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা কম থাকছে। ফলে আইইডিসিআর থেকে সব ধরনের জনসমাগম থেকে নিজেদের দূরে রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
আইইডিসিআরের দেয়া তথ্যানুযায়ী, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন একজন। এতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ জনে। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৮ জনে। ভাইরাসটি থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও তিনজন। ফলে মোট সুস্থ হয়েছেন ৩৩ জন।