বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৮ জন আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৮ জনে। এদের মধ্যে আরও একজন মৃত্যুবরণ করেছেন। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন আরও তিনজন। মোট সুস্থ হয়েছেন ৩৩ জন।
আজ রোববার অনলাইনে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এই তথ্য তুলে ধরেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
মহাখালীর ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এমআইএস) বিভাগের মিলনায়তনে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে যুক্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টার করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন মন্ত্রী।
ব্রিফিংয়ে জাহিদ মালেক বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও একজন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এছাড়া ১৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৮৮ জনে। আক্রান্ত ৪৬ জন চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে ৩২ জন হাসপাতালে এবং ১৪ জন বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গত বছরের শেষ দিন চীনের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর সেখানে তাণ্ডব চালানোর পর ভাইরাসটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে দুই শতাধিক দেশ ও অঞ্চলে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়লেও সবচেয়ে মহামারি আকার ধারণ করেছে ইতালি-স্পেনসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে। ভাইরাসটি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র্রেও।
ইতোমধ্যে অচেনা ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে সারা বিশ্বে প্রায় ৬৪ হাজারের মতো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর আক্রান্তের সংখ্যা ১২ লাখ।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশেও প্রথম করোনা শনাক্ত করা হয়। সেদিন তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্তের কথা জানানো হয়। পরে আরও ৬৭ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ পাওয়ার কথা জানায় আইইডিসিআর। সবমিলিয়ে গতকাল পর্যন্ত ৭০ জন করোনায় আক্রান্ত ছিল।
তার মধ্যে আটজন মারা যান। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন ৩০ জন। আজ আক্রান্তের তালিকায় যোগ হয় আরও ১৮জনের নাম। আর মারা যাওয়ার তালিকায় একজন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার তালিকায় যোগ হয় আরও তিনজনের নাম।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পর ব্রিফিং করেন আইইডিসিআর এর পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৬৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ১৩ জন শনাক্ত হয়েছেন আইইডিসিআরে, বাকি পাঁচজন ঢাকার বাইরের ল্যাবে শনাক্ত। আক্রান্তদের মধ্যে ১৩ জন পুরুষ, পাঁচজন নারী। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় আরও একজন মারা গেছেন, তার বয়স ৫৫ বছর। তিনি নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা ছিলেন।
সেব্রিনা ফ্লোরা আরও বলেন, রাজধানী ঢাকার বাসাবো এলাকায় নয়জন রোগী শনাক্ত হয়েছে আর মিরপুরে ১১ জন। দুটি এলাকায় আমরা ক্লাস্টার আকারে রোগী পেয়েছি।
ব্রিফিংয়ে কথা বলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালামও। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ১১১ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে এবং নয়জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে সারাদেশে ১২ হাজার ৬৬৯ জন কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০ জনকে আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে এবং তিনজনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে ৪০০ জনকে আইসোলেশনে নেয়া হলেও তাদের মধ্যে ৩৩৬ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়।