ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরব ও তার মিত্ররা একতরফা যুদ্ধবিরতি পালন করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। বুধবারের এই ঘোষণা পরদিন (আজ) বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে কার্যকর করা হবে।
এতে গত পাঁচ বছর ধরে চলা রক্তক্ষয়ী এই যুদ্ধের অবসানের পথ তৈরি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে এমন তথ্য মিলেছে।
জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনা শুরু করতে ও ইয়েমেনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্ক থেকেই এই সিদ্ধান্ত বলে দাবি করেন সৌদি কর্মকর্তারা।
আরব বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ ইয়েমেনের স্বাস্থ্যব্যবস্থাও খুব নাজুক। গত কয়েক বছরের যুদ্ধে তা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে।
যাই হোক, এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়া কোনো দেশ করোনাভাইরাসের কারণে প্রথমবারের মতো বৈরিতা থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিল।
বৈশ্বিক মহামারী এই ভাইরাসটির কারণে বিশ্বের সর্বত্র আতঙ্ক বিস্তার করছে। সপ্তাহ দুয়েক আগে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বিশ্বজুড়ে মানবিক অস্ত্রবিরতির আহ্বান জানিয়েছিলেন।
অন্তত দুই সপ্তাহ এই অস্ত্রবিরতি স্থায়ী হবে। ইয়েমেনের আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সরকার ও সৌদি মিত্ররাও এর অংশ হবে বলে কর্মকর্তারা জানান।
তবে অস্ত্রবিরতি ঘোষণার আগে হুতি বিদ্রোহীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। সৌদির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, হুতিরা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করলে তার জবাব দেয়ার অধিকার সৌদির রয়েছে। এদিকে সৌদি রাজ পরিবারের অন্তত দেড়শ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। রাজপরিবারের ঘনিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে এই খবর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিয়াদের গভর্নর প্রিন্স ফয়সাল বিন বান্দর বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি এখন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) আছেন। রাজ পরিবারের ঘনিষ্ঠ দুজন সদস্য এই তথ্য জানিয়েছেন।
সৌদি রাজ পরিবারের বেশ কয়েকজন প্রিন্স সম্প্রতি যারা ইউরোপ ভ্রমণ করেছেন তারাও আক্রান্তের তালিকায় আছেন। রাজ পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্য অসুস্থতাবোধ করছেন।
সৌদি বাদশাহ সালমান রাজপরিবার ছেড়ে জেদ্দায় একটি ভবনে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করছেন। ক্রাউন প্রিন্স সালমান এবং মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন সদস্য রাজপরিবার ছেড়ে দূরবর্তী এলাকায় অবস্থান করছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
দেশটির প্রসিদ্ধ হাসপাতালগুলোর বিখ্যাত সব চিকিৎসক যারা সৌদি রাজ পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন তারা ৫০০ বেডের একটি হাসপাতাল তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সেখানে রাজপরিবার ও তাদের ঘনিষ্টদের মধ্যে যারা করোনা সন্দেহভাজন তাদের চিকিৎসা দেয়া হবে।
২ মার্চ সৌদিতে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর ৬ সপ্তাহে দেশটিতে ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনাভাইরাসে। আর ২৭৯৫ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।