ইউরোপ-আমেরিকার মতো অতোটা ভয়ংকর না হলেও বাংলাদেশে মরণঘাতি করোনা পরিস্থিতি দিনে দিনে বেশ খারাপের দিকেই যাচ্ছে। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা, মরছে মানুষ। তাই ঝুঁকি এড়াতে সচেতন মানুষদের সবাই এখন ঘরবন্দি। তাদের মধ্যে রয়েছেন বিনোদন জগতের তারকারাও। কিন্তু কতদিন এভাবে ঘরে থাকতে হবে? ঘরে থাকতে ভালোই বা লাগে কতদিন? এমন প্রশ্ন অনেকের মনে। উত্তর অজানা।
তবে ঘরবন্দি এই অলস সময়টাকে একটু বুদ্ধি খাটালেই উপভোগ্য করে তোলা সম্ভব। সেই মন্ত্রই শেখালেন নাটক ও চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। সম্প্রতি শিশু অধিকার ও সমৃদ্ধির জন্য বিশ্বব্যাপী কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউনিসেফ তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে তিশার তিন মিনিটের একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করেছেন। সেখানেই অভিনেত্রী জানিয়েছেন, ঘরবন্দি অলস সময়কে কীভাবে কাজে লাগানো যায় এবং উপভোগ্য করতে হয়।
ভিডিও বার্তায় যা বলেছেন তিশা
‘বাড়িতে থাকা সহজ কাজ নয়। এই কথাটা দুই মাস আগেও যদি আমাদের কেউ বলত, আমরা হেসে উড়িয়ে দিতাম। কিন্তু এখন যখন দিনের পর দিন আমাদেরকে বাড়িতে থাকতে হচ্ছে, এখন আমরা বুঝতে পারছি, বাড়িতে থাকা আসলেই সহজ কাজ নয়। কিন্তু বাড়িতে থাকা মরে যাওয়ার চেয়ে তো সহজ। চীন, ইতালি, স্পেন, আমেরিকার দিকে তাকালেই আমরা বুঝতে পারব, করোনার আক্রমণ কতটা ভয়ংকর।’
‘আমরা আজকে ১৫ দিনের বেশি হলো ঘরে। কিছুক্ষণ পর পর হাত ধুচ্ছি, চোখে-মুখে হাত দিচ্ছি না। দুজন মিলে ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করছি। শুরুর দিকে ঘরে থাকতে কষ্ট না হলেও একটা সময় বোরিং লাগতে শুরু করল। ফারুকী সময়টাকে তিন ভাগে ভাগ করে নিল। ওর নতুন ছবির এডিটিং, ঘরের কাজ এবং বিশ্রাম। শেষের দুইটা আমিও করলাম আনন্দের সঙ্গে। কিন্তু আমার ক্রিয়েটিভ আনন্দ পাওয়ার উপায় কী? আমার তো শুটিং করতে বাইরে যাওয়ার কোনো উপায় নেই।’
‘একটা কথা আছে না, কঠিন সময় মানুষের ভেতর থেকে তার সেরা দিকটা বের করে আনে, নয়তো বাজে দিকটা। সিদ্ধান্ত নিলাম, হতাশ বা দায়িত্বজ্ঞানহীন না হয়ে আমি আমার ভেতরের সেরা আমিটাকে খুঁজে বের করব। আমি তাকালাম আমার পুরনো কাপড়চোপড় আর পরিত্যক্ত জিনিসপত্রের দিকে। তারপর কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই বসে গেলাম কিছু একটা করতে। খেলতে খেলতে একসময় তৈরি করে ফেললাম টিস্যু বক্স, নানারকম শো-পিস, পরিত্যক্ত টি-শার্ট এবং কার্পেট দিয়ে কোশাক কভার।’
‘দুইদিন আগেও আসলে জানতাম না যে, এই কাজগুলো আমি করতে পারি। কিন্তু পারলাম তো। আপনারাও চাইলে নিজেদেরকে নতুন করে আবিষ্কার করতে পারেন। নতুন কিছু শিখতে পারেন। অনেক আগে বই কিনে রেখেছেন সেগুলো পড়তে পারেন। এই ভাবে সময়টাকে উপভোগ্য করে তুলতে পারেন।’
‘এই দুর্যোগের দিনে তরুণদের দায়িত্ব হচ্ছে ঘরে থাকা এবং অন্যকে ঘরে থাকতে উৎসাহিত করা। করোনার সঙ্গে আমাদের এই লড়াই অনেক লম্বা সময়ের জন্য হতে যাচ্ছে। অতএব, একটু ধৈর্য্য সহকারে সময়টা পার করতে হবে। পরিবারের সবাই মিলে কাজ ভাগাভাগি করে নিতে হবে। বয়জ্যেষ্ঠ ও শিশুদের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। আর প্রার্থনা করতে হবে, যেন এই ঝড়টা আমরা খুব তাড়াতাড়ি পার হয়ে যেতে পারি। নিশ্চয়ই পারব, পারব না?’