মানবদেহে করোনার ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলক প্রয়োগ বৃহস্পতিবার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

করোনার ভ্যাকসিন
প্রতীকী ছবি

বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক সৃষ্টি করা প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনার একটি ভ্যাকসিন আগামীকাল বৃহস্পতিবার মানবেদেহে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হবে। ভ্যাকসিনটির নাম- সিএইচএডিওএক্স১ এনকোভ-১৯।

গতকাল মঙ্গলবার লন্ডনে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে অংশ নিয়ে ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক এই ঘোষণা দেন।

ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীদের তৈরি এই ভ্যাকসিন সফল হলে বড় ধরনের এক বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেয়ে যাবে গোটা বিশ্ব। খবর বিবিসি’র।

ম্যাট হ্যানকক ঘোষণা দেন, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের যৌথপ্রচেষ্টায় তৈরি সিএইচএডিওএক্স-১ এনকোভ-১৯ ভ্যাকসিন আগামী বৃহস্পতিবার মানবদেহে প্রয়োগ করা হবে।

তিনি জানান, এতে সুফল আসলে ভ্যাকসিন তৈরির প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য ব্রিটিশ সরকার বিজ্ঞানীদের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের ২০ মিলিয়ন পাউন্ড এবং ইমপেরিয়াল কলেজকে ২২.৫ মিলিয়ন পাউন্ড দেবে। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই ভ্যাকসিন চূড়ান্তভাবে মানবদেহে প্রয়োগে আমরা আশাবাদী। ভ্যাকসিনটির কয়েক লাখ ডোজ তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে আগামী সেপ্টেম্বরে করোনাভাইরাসের ১০ লাখ ভ্যাকসিন বাজারে ছাড়া হবে বলে জানিয়েছিলেন যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। চলতি সপ্তাহেই এই ভ্যাকসিন যুক্তরাজ্যে মানবদেহে প্রয়োগ করা হবে এবং পরীক্ষামূলকভাবে যাদের দেহে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে তারাও প্রস্তুত আছেন বলে জানান বিজ্ঞানীরা।

গত ১৯ এপ্রিল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আদ্রিয়ান হিল বলেছিলেন, মানবদেহে করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগের আগেই আমরা উৎপাদন শুরু করেছি। প্রথমে আমরা ৩ লিটারের ডোজ প্রস্তুত রাখছি। এরপর ৫০ লিটার, ১০০ লিটার, ২০০ লিটার এমনকি ২০০০ লিটার উৎপাদন করা হবে। যদি ফল ভালো আসে তাহলে প্রাথমিকভাবে সেগুলো বাজারে ছাড়া বে।

উল্লেখ্য, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ব্রিটিশ সরকার ও ব্রিটেনের কয়েকটি দাতব্য সংস্থার অর্থায়নে ২০০৫ সালে গড়ে তোলা হয় জেনার ইনস্টিটিউট। উদ্দেশ্য সংক্রমণজনিত রোগ নিয়ে গবেষণা আর টিকা তৈরি। এডওয়ার্ড জেনারকে বলা হয় ভ্যাকসিনের জনক। প্রায় ২০০ বছর আগে গুটি বসন্তের টিকার অন্যতম আবিষ্কারক ছিলেন। গুটি বসন্তের টিকা আবিষ্কার করে থেমে থাকেননি তিনি। জনসংখ্যার একটা বড় অংশকে এই টিকার আওতায় নিয়ে আসতে তার অবদান চিরস্মরণীয়।

এই প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানী ড. সারাহ গিলবার্ট। ভাইরাস নিয়ে কাজ করেন। সারাহার নেতৃত্বে অক্সফোর্ডের একদল বিজ্ঞানী জানুয়ারি মাস থেকেই ভ্যাকসিন তৈরির কাজ শুরু করেন। মার্চ মাসে ব্রিটিশ সরকারের একটি সংস্থা ২২ কোটি টাকার অনুদান দেয় এই গবেষণায়। সারাহ ও তাঁর দল অন্য সংক্রমণজনিত রোগের ভ্যাকসিন তৈরির পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে। এই অভিজ্ঞতা করোনার পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন তৈরিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে