মহামারি নভেল করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) কাছে সহায়তা চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
শনিবার আইডিবি প্রেসিডেন্ট ড. বন্দর এম. এইচ হাজ্জার সঙ্গে এক টেলিকনফারেন্সে এ সহায়তা চান অর্থমন্ত্রী। জবাবে আইডিবি প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের পাশে থাকবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
অর্থমন্ত্রণালয় থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, টেলিকনফারেন্সে অর্থমন্ত্রী আইডিবি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে করোনার প্রভাবে মানবজাতি ও অর্থনীতির ওপর যে বিরুপ প্রভাব পড়ছে তা নিয়ে আলোচনা করেন।
এ সময় করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের গৃহিত পদক্ষেপ তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প, পরিষেবা খাত এবং কুটির শিল্পগুলিকে সুরক্ষার জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে কার্যনির্বাহী মূলধনের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘লকডাউন ও গণছুটির কারণে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নেমে এসেছে স্থবিরতা। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষ ও অর্থনীতির জন্য ১১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, যা জিডিপি’র ৩.৫ শতাংশ। এই প্যাকেজের অর্থ ব্যয়ে জনসাধারণের ব্যয় বৃদ্ধি, সামাজিক সুরক্ষা জালকে প্রশস্ত করা এবং আর্থিক সরবরাহ বাড়ানোর ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হয়েছে। এ মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি মানুষের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ক্ষতিগ্রস্থ স্বল্প আয়ের মানুষের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় অর্থসংস্থান আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।’ এসময় অর্থমন্ত্রী খাদ্য নিরাপত্তা, চিকিৎসা ক্ষেত্রে সহায়তা এবং কৃষি ব্যবস্থার উন্নয়ন ও যান্ত্রিকীকরণ এ তিনটি ক্ষেত্রে আইএসডিবির সহায়তা কামনা করেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আইডিবির প্রেসিডেন্ট ওই তিনটি ক্ষেত্রে সহযোগিতার প্রস্তাব গ্রহণ করে বলেন, আইডিবি বাংলাদেশ টিমের সাথে বসে অর্থায়ন ও টাইমলাইন আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করে নেবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ড. বন্দর এম. এইচ হাজ্জার বাংলাদেশের গৃহিত বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। সময়োপযোগী আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজের ঘোষণা করায় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, আপনার মাধ্যমে আমি আশ্বস্থ করতে চাই যে, আইডিবি বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের সাথে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশাআল্লাহ।
অর্থমন্ত্রী আইএসডিবি সদস্য দেশগুলির জন্য কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ২.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের যে কৌশলগত প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া প্যাকেজ ঘোষণা করেছে তার জন্য আইডিবি ‘র প্রেসিডেন্টেকে ধন্যবাদ জানান। তিনি প্রেসিডেন্টের গতিশীল নেতৃত্ব ও ভূমিকার প্রশংসা করে আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, আইডিবি‘র এ পদক্ষেপ সদস্য দেশগুলোর মানুষ ও অর্থনীতির উপর কোভিড-১৯ এর বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
বাংলাদেশ আইডিবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং ১৯৭৪ সাল থেকে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বস্ত অংশীদার। বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আইডিবি’র সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১৮ সালে ঢাকায় আঞ্চলিক কেন্দ্র চালু করেছে। আইডিবি’র আঞ্চলিক হাবের উপস্থিতিতে আঞ্চলিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে অর্থমন্ত্রী আন্তরিকভাবে আশা ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশে বর্তমানে বিভিন্ন খাতে আইডিবি’র সহায়তায় মোট ১১ টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন হার সন্তোষজনক।