করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় দেশে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। আক্রান্তের তালিকায় যোগ হচ্ছে অনেক পুলিশ সদস্যর নামও। বিশেষ করে বাহিনীটির সদস্যদের মধ্যে যারা মাঠপর্যায়ে কাজ করেন তাদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যাটা বেশি। গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৬৪ পুলিশ সদস্য। তাদের নিয়ে সারাদেশে করোনায় মোট ৭৪১ জন পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হলেন। আর মারা গেছেন মোট পাঁচজন।
শনিবার দুপুরে পুলিশ সদরদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সদরদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, সারাদেশের মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় অর্ধেক। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন ২৮ জন আক্রান্তের পর সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৫৬ জনে।
সারাদেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭৪১ জন। আর হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ১২৫০ জন। তাঁদের মধ্যে নারী পুলিশ এবং পুলিশে কাজ করা সাধারণ কর্মচারীও আছেন। আইসোলেশনে রয়েছেন ১৭৪ পুলিশ সদস্য। আর সুস্থ হয়েছেন ৫৭ জন।
শনিবার সকালে উপ-পরিদর্শক সুলতানুল আরেফিনের মৃত্যুতে মোট মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচজনে।
এর আগে একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই), একজন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) এবং দুইজন কনস্টেবল করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশজুড়ে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও লকডাউন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য পুলিশ সদস্যরা নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। এছাড়া রাস্তায় জীবাণুনাশক ছিটানো, শ্রমজীবী মানুষকে সহায়তা করা, চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়াসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নানা ধরনের কাজ করছেন পুলিশ সদস্যরা। এসব কাজ করতে গিয়ে নিজের অজান্তেই তারা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন।
প্রথম দিকে সুরক্ষা সরঞ্জাম কম থাকলেও সেটা বর্তমানে বাড়ানো হয়েছে। তবে দিনের কাজ শেষ করে গাদাগাদি করে ব্যারাকের মেসে থাকায় তাদের মধ্যে এই ভাইরাস দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর সেখানে তাদের লক্ষণ-উপসর্গ প্রকাশ পেতে সময় লাগছে। তবে এরইমধ্যে একজন থেকে তা ছড়িয়ে পড়ছে পাশে থাকা অন্যদের মধ্যেও।
পুলিশ সদর দপ্তর ও বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তারা বলছেন, মাঠপর্যায়ে কাজ করে এমন পুলিশ সদস্যদের ‘ব্যাপকহারে’ প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে ডিউটির আগে প্রতিদিন মাঠপর্যায়ের সদস্যদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ দূরত্ব বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করতে বলা হচ্ছে। এছাড়া পুলিশ সদস্যদের ব্যারাকেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাড়তি সদস্যদের আবাসনের জন্য স্থানীয় হোটেল, মোটেল কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু তারপরও আক্রান্ত ঠেকানো যাচ্ছে না।