ভেসে আসা সেই রোহিঙ্গাদের পাঠানো হলো ভাসানচরে

বিশেষ প্রতিনিধি

ভাসানচর
ফাইল ছবি

কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলোতে কোভিড-১৯ মহামারির সংক্রমণ ঠেকাতে কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে পাঠানো হয়েছে। এর মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুত রাখা ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের প্রবেশ ঘটল।

শুক্রবার (১ মে) রাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করা রোহিঙ্গাদের একটি ছোট দলকে শনিবার ভাসানচরে পাঠানো হয়েছে বলে মত ও পথকে নিশ্চিত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

universel cardiac hospital

তবে ঠিক কতজন রোহিঙ্গাকে পাঠানো হয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সে সংখ্যা জানাতে পারেননি। কক্সবাজারের একটি সূত্র বলছে, প্রায় ৭০ জন রোহিঙ্গাকে সেখানে নিয়ে গেছে কোস্টগার্ড।

রোববার (৩ মে) দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নত ও পথকে বলেন, ‘শুক্রবার রাতে ছোট ছোট ডিঙি নৌকায় করে বেশ কিছু রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে দালালদের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। স্থানীয়দের মাধ্যমে কোস্টগার্ড তাদের আটক করে প্রথমবারের মতো ভাসানচরে পাঠানো হয়েছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এটাই রোহিঙ্গাদের প্রথম কোনো দল, যাদের ভাসানচরে পাঠানো হলো। এদের খাদ্যসহ সবধরনের ব্যবস্থা আপাতত দেয়া হবে।’

রোহিঙ্গাদের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সাগরে রোহিঙ্গা বোঝাই দুটি নৌকা ছিল। শুনেছিলাম একেকটিতে ২৫০-৫০০ জন করে রোহিঙ্গা। তখন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন আমাকে ব্যক্তিগতভাবে ফোন করে এসব রোহিঙ্গাদের নেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। আমরা নেব না জানিয়ে জাতিসংঘের আইন অনুযায়ী এই কোস্টাল অঞ্চলের দেশগুলোকেও দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানাই।’

‘এরপর হঠাৎ করে আমরা জানলাম, ভাসতে থাকা নৌকা দুটি যা কখনোই আমাদের সীমানায় ছিল না, তারা কোথায় গেছে কেউ জানে না। পরবর্তী সময়ে জানা গেল, তারা মিয়ানমারের সীমান্তে চলে গেছে। এরপর দেখা গেল দালালদের মাধ্যমে ডিঙি নৌকায় করে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।’

এভাবে নতুন কৌশলে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে বলে মনে করেন ড. মোমেন।

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এখনও কেউ কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হননি। নতুন যারা এসেছে তাদেরকে কেউ আক্রান্ত করে পাঠিয়েছি কি-না কে জানে। এমন সন্দেহ থেকেই তাদেরকে ভাসানচরে পাঠানো হয়েছে।’

যেসব দালালরা রোহিঙ্গা নিয়ে আসছেন, তাদের পেছনে স্থানীয় কোনো কোনো এনজিওর ইন্ধন আছে বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন।

উল্লেখ্য, কিছুদিন ধরে প্রায় ৫০০ রোহিঙ্গাবাহী দুটি ট্রলার সমুদ্রে ভাসছিল। এ সময় জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা এই রোহিঙ্গাদের নেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি চাপ অব্যাহত রাখে।

তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, নতুন করে রোহিঙ্গাদের নেয়া সম্ভব নয়। তিনি এ অঞ্চলের অন্য দেশগুলোকে দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানান। যুক্তরাজ্যকেও জাহাজ পাঠিয়ে তাদের উদ্ধারের আহ্বান জানান ড. মোমেন। তবে ডিঙি নৌকায় করে প্রবেশ করা এসব রোহিঙ্গাকে শেষমেশ বাংলাদেশকে গ্রহণ করতে হলো।

এর আগে সরকার নোয়াখালীর ভাসানচরকে রোহিঙ্গাদের বসবাসের উপযোগী করতে প্রকল্প নেয়। মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ভাসানচরে বসবাসের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে