দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৬০ পুলিশ সদস্য করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৯১৪ জনে। আর করোনাযুদ্ধে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে পাঁচ পুলিশ সদস্যের।
ঢাকাসহ সারা দেশের পুলিশ ইউনিটের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার (৪ মে) পর্যন্ত এ ভাইরাসটিতে পুলিশে আক্রান্ত হয়েছেন ৯১৪ জন। গতকাল রোববার এই সংখ্যা ছিল ৮৫৪। এর মধ্যে শুধু ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশেই (ডিএমপি) আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪৯ জন পুলিশ সদস্য। আর আক্রান্তদের মধ্যে মাঠ পর্যায়ের সদস্যই বেশি।
ডিএমপি জানায়, করোনায় মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা ছাড়াও তাদের দুইজন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) ও একজন সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) পদমর্যাদার কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছেন।
সারা দেশের পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, পুলিশে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে আরও ৩১৫ জনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসায় ১ হাজার ২৫০ জন কর্মকর্তাকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এপর্যন্ত ৫৮ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যে জীবন দিয়েছেন পাঁচ পুলিশ সদস্য। এদের মধ্যে চারজন ডিএমপি’র একজন এসবি’র। তারা হলেন, ডিএমপির কনস্টেবল জসিম উদ্দিন (৪০), এএসআই মো. আব্দুল খালেক (৩৬), ট্রাফিক বিভাগের কনস্টেবল মো. আশেক মাহমুদ (৪৩), পিওএমের এসআই সুলতানুল আরেফিন এবং পুলিশের বিশেষ শাখার এসআই নাজির উদ্দীন (৫৫)।
এদিকে সোমবার (৪ মে) রাজধানীর খিলগাঁওয়ে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি) শাখার কনস্টেবল তোফাজ্জল হোসেন করোনা হতে পারে এই আশঙ্কায় ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) সোহেল রানা মত ও পথকে বলেন, জনগণের সুরক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশের দুই লক্ষাধিক সদস্য মাঠে আছেন। দায়িত্ব পালনের সময় তারা যাতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে নিজেকে সুরক্ষিত করতে পারেন এ বিষয়ে আমরা তাদের সচেতন করেছি। সরকার থেকে স্বাস্থ্যবিধিসহ নানা নির্দেশনা পাওয়ার পরপরই আমরা আমাদের পুলিশ সদস্যদের এগুলো জানাচ্ছি। সিনিয়র অফিসাররাও বিভিন্ন ইউনিটে গিয়ে তাদের সঙ্গে এসব নিয়ে কথা বলছেন। তাদের মাস্ক এবং হ্যান্ডগ্লাভস সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়াও তারা যেসব অফিস ও ব্যারাকগুলোতে থাকছেন সেখানে আমরা পর্যাপ্ত জীবাণুনাশক ব্যবহার করেছি।
পুলিশ সদর দফতরের পক্ষে তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোতে পুলিশ সদস্যদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে। চিকিৎসার পাশাপাশি তাদের মনোবল যেন অটুট থাকে এজন্য ঊর্ধ্বতন অফিসাররা এবং তাদের লাইন চিফরা তাদের হাসপাতালে ভিজিট করছেন। এছাড়াও অসুস্থদের পরিবারের সদস্যদের খোঁজ রাখার জন্য সদর দফতর থেকে স্ব স্ব ইউনিটকে জানানো হয়েছে।