করোনা: মধ্যপ্রাচ্য থেকে দেশে ফিরছেন ২৯ হাজার প্রবাসী

নিজস্ব প্রতিবেদক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ফাইল ছবি

আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রায় ২৯ হাজার বাংলাদেশি কর্মী দেশে ফিরছেন। মূলত করোনাভাইরাস ইস্যুতে কারাগার থেকে সদ্য মুক্তি পাওয়া, কর্মহীন এবং দীর্ঘ সময় ধরে অবৈধভাবে মধ্যপ্রাচ্যে দেশগুলোতে থাকা ব্যক্তিরা এই তালিকায় রয়েছেন।

বুধবার প্রবাসী বাংলাদেশিকর্মীদের দেশে ফেরানো নিয়ে পঞ্চম আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে এক ভিডিও বার্তায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন এসব তথ্য জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে বিদেশে আটকেপড়া প্রবাসী কর্মীদের অবশ্যই দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ২৮ হাজার ৮৪৯ জন প্রবাসী কর্মী দেশে ফিরবেন। তাদের আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তারা ঢাকা পৌঁছাচ্ছেন।’

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর কারাগার খালির সিদ্ধান্তে মুক্তিপ্রাপ্তরা এরইমধ্যে দেশে ফিরতে শুরু করেছেন।

গত ২৪ এপ্রিল থেকে গত ৫ মে পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ বিশেষ ফ্লাইটে এক হাজার ৬৩৫ বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে ফিরেছেন। বিশেষ করে মধপ্রাচ্যের দেশ ওমান, কুয়েত ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে একাধিক ফ্লাইট এসেছে।

মোমেন বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য থেকে তিন হাজার ৭৯৫ জন বাংলাদেশি ফেরত এসেছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই সেখানকার জেলে ছিলেন এবং তাদের সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছে। এছাড়াও ওমরাহ পালনকারী কিছু এসেছেন। কিছু অনিবন্ধিত শাস্তিপ্রাপ্তও ফিরেছে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সৌদি আরব বলেছে চার হাজার ২০০ জনের মতো ফেরাতে পারে। জর্ডান, ওমান, লেবানন থেকেও ফেরত আসার সম্ভাবনা আছে। লেবাননে তারা ঝামেলায় আছেন। তাদের আইওএম এর মাধ্যমে ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কাতার ও ইরাক থেকেও ফিরছে। ইরাকে বড়সংখ্যক প্রবাসীর চাকরি চলে গেছে। তাদেরও ফেরত আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

করোনার আগে বিভিন্ন দেশে আটকা পড়াদের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘বিদেশে গিয়ে যে বাংলাদেশিরা আটকে গেছে, যেমন ভারত, চীন, জাপান, সিঙ্গাপুর তাদেরও দুই হাজার ৮৫৩ জনকে ফেরত এনেছি। আরও কিছু আনার জন্য ভাড়া করা ফ্লাইটের ব্যবস্থা করছি। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র থেকেও ফেরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

কুয়েতে প্রায় সাড়ে চার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশিকে ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জেনেছি, তাদের ঠিকমত খাবার দেওয়া হচ্ছে না। মিশন তাদের খাবারের ব্যবস্থা করছে। কুয়েত সরকার যখনই চাইবে তখনই আমরা তাদের নিয়ে আসব। বাকি প্রবাসী যখনই চান আসতে পারেন। কুয়েত সরকার নিজেরাই ফ্লাইটের ব্যবস্থা করে তাদের ফেরত পাঠাবে। যখনই তারা ফ্লাইট সিডিউল দেবে তখনই তাদের গ্রহণ করব।’

মালদ্বীপ থেকে আগামীকাল ৪০০ প্রবাসী দেশে আসবেন বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘মালদ্বীপ থেকে আগেও এসেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট বলেছে প্রায় দেড় হাজারের মতো আসবে। আমরা অবশ্যই তাদের গ্রহণ করব।’

তবে মন্ত্রী যেখানে যে বা যারা রয়েছেন তাদের বাধ্য না হলে দেশে না ফিরতে অনুরোধ করেন। বিশেষত শ্রমিকরা বৈধ বা অবৈধ যে অবস্থা যে দেশে রয়েছেন সেখানে তাদের অন্তত খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্র ও সরকারগুলোর প্রতি অনুরোধ জানান মোমেন।

বৈঠকে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে