চীন থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনার সংক্রমণ রোধে ব্যর্থ হলে আফ্রিকা মহাদেশে এক ৯০ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
এছাড়া মহাদেশটিতে বছরজুড়ে করোনার সংক্রমণে আক্রান্ত হতে পারেন দুই কোটি ৯০ থেকে ৪ কোটি ৪০ লাখ মানুষ, এমন ভবিষ্যৎবাণীও দিয়েছে সংস্থাটি। খবর: এএফপির।
আফ্রিকা মহাদেশের ৪৭টি দেশের পূর্বাভাস নমুনায়নের ভিত্তিতে ডব্লিউএইচও’র কঙ্গোর আঞ্চলিক কার্যালয়ে একটি জরিপ করা হয়। এরপর এক বিবৃতিতে এমন আশঙ্কার কথা জানানো হয়।
সংস্থাটির বিবৃতিতে বলা হয়, এসব দেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় একশো কোটি। সংক্রমণের ধীর গতি, বাকি বিশ্বে দেখা যাওয়া কম বয়সীদের মধ্যে মারাত্মক রোগ এবং কম মৃত্যু হারের বিষয়টি মডেলটিতে পর্যালোচনা করা হয়েছে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শেষ দিকে চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের মহামারিতে বিশ্ব জুড়ে দুই লাখ ৭৫ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। বিশেষজ্ঞরা বরাবরই বলে আসছেন এই মহামারিতে বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে আফ্রিকা।
দুর্বল স্বাস্থ্য সেবা, দারিদ্রের উচ্চ হার, কয়েকটি দেশের সংঘাত এবং আগে থেকেই মহামারি চলতে থাকার কারণে মহাদেশটি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে মনে করেন তারা। তবে এখন পর্যন্ত মহাদেশটিতে সংক্রমণের হার ইউরোপ বা যুক্তরাষ্ট্রের মতো মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছায়নি। সংক্রমণের ধীরগতির কারণে আফ্রিকায় করোনা ভাইরাসের মহামারি দীর্ঘসময় ধরে চলতে পারে সতর্ক করা হয়েছে।
ডব্লিউএইচও আফ্রিকা পরিচালক মাতসিদিসো মোয়েতে বলেন, আফ্রিকায় কোভিড-১৯ বাকি বিশ্বের মতো বিস্তৃতভাবে ছড়িয়ে না পড়লেও আশঙ্কা রয়েছে এটি ধীরে ধীরে সংক্রমণের হটস্পটে পরিণত হবে।
তিনি বলেন, এই অঞ্চলের অনেক দেশের সরকার যদি সক্রিয় পদক্ষেপ না নেয় তাহলে আগামী কয়েক বছর ধরে কোভিড-১৯ আমাদের জীবনের স্থায়ী ঘটনা হয়ে যাবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, করোনায় আক্রান্তদের মধে ৫৫ লাখ মানুষের হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে। এতে মহাদেশটির চিকিৎসা ব্যবস্থায় চাপ বাড়বে।
গত মার্চে আফ্রিকার ৪৭টি দেশের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে করা একটি জরিপে দেখা যায় প্রতি ১০ লাখ মানুষের জন্য আইসিইউ বেড রয়েছে মাত্র নয়টি। এই সংখ্যা একেবারে অপর্যাপ্ত বলেও উদ্বেগ জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।