রাজধানীতে বাসার ২ কিলোমিটারের বাইরে শপিংয়ে যেতে মানা

মহানগর প্রতিবেদক

সীমিত পরিসরে দোকান-শপিংমল খোলার অনুমতি
ফাইল ছবি

রাজধানীতে বসবাসরত নাগরিকরা নিজ এলাকার দুই কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত শপিংমলে নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে কেনা-কাটা করতে পারবেন। এক এলাকার ক্রেতা অন্য এলাকায় গিয়ে যেতে কিংবা কেনাকাটা করতে পারবেন না।

এক্ষেত্রে বাসা থেকে বের হলে অবশ্যই নিজের পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে এবং মার্কেটের প্রবেশমুখে দেখাতে হবে। এসব নির্দেশনা মেনে রাজধানীবাসীকে শপিংমলে যেতে আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এরই মধ্যে ১২ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃত্যু সংখ্যাও প্রায় দুইশ। গত ২৬ মার্চ থেকে দোকানপাট ও বিপণিবিতান বন্ধ রয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আগে থেকেই মে মাসে করোনা সংক্রমণ বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। এর মধ্যেই ব্যবসায়ীদের অনুরোধে ১০মে থেকে সীমিত পরিসরে শপিংমল ও মার্কেট খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে সরকার।

করোনাকালীন এই পরিস্থিতিতে শপিংমল ও মার্কেট খোলা রাখার ব্যাপারে ডিএমপির পক্ষ থেকে ১৪টি নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতে দেওয়া এসব নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে-

১. সরকার ঘোষিত নির্ধারিত সময় (সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা) পর্যন্ত শপিংমল ও দোকান খোলা রাখা যাবে। তবে ফুটপাতে বা প্রকাশ্য স্থানে হকার, ফেরিওয়ালা, অস্থায়ী দোকানপাট বসতে দেয়া যাবে না।

২. করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ক্রেতারা তাদের নিজ নিজ এলাকার দুই কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত শপিংমলে নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে কেনা-কাটা করতে পারবেন। এক এলাকার ক্রেতা অন্য এলাকায় অবস্থিত শপিংমলে কেনাকাটা বা গমনাগমন করতে পারবেন না।

৩. বসবাসের এলাকা সম্পর্কে নিশ্চিত হবার জন্য প্রত্যেক ক্রেতা তার নিজ নিজ পরিচয়পত্র যেমন: ব্যক্তিগত আইডি কার্ড/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স/বিদ্যুৎ/গ্যাস/পানির বিলের মূল কপি ইত্যাদি) বহন করবেন এবং তা প্রবেশমুখে প্রদর্শন করবেন।

৪. প্রত্যেক শপিংমলের প্রবেশমুখে স্বয়ংক্রিয় জীবানুনাশক টানেল বা চেম্বার স্থাপন করতে হবে এবং তাপমাত্রা মাপার জন্য থার্মাল স্ক্যানারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এছাড়াও প্রত্যেক দোকানে পৃথকভাবে তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা রাখতে হবে।

৫. প্রতিটি শপিং মলে প্রবেশের ক্ষেত্রে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। মাস্ক পরিধান ছাড়া কোন ক্রেতা দোকানে প্রবেশ করতে পারবে না। সকল বিক্রেতা ও দোকান কর্মচারীকে মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস্ পরতে হবে।

৬. প্রতিটি শপিংমল/বিপণি বিতানের সামনে সতর্কবাণী “স্বাস্থ্য বিধি না মানলে, মৃত্যু ঝুঁকি আছে” সম্বলিত ব্যানার টানাতে হবে।

৭. শপিংমলে প্রবেশ, বাহির ও কেনাকাটার সময় ক্রেতা-বিক্রেতাকে কমপক্ষে ১ মিটার (প্রায় ৪০ ইঞ্চি) দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এই নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে দোকানে যতজন ক্রেতা অবস্থান করতে পারেন তার বেশি ক্রেতাকে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না।

৮. সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য প্রত্যেক দোকানের সামনে দূরত্ব মেপে মার্কিং করতে হবে।

৯. শপিংমলগুলোতে বয়স্ক, শিশু ও অসুস্থদের (হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও অন্যান্য) গমনাগমনে নিরুৎসাহিত করতে হবে।

১০. কেনা-কাটা শেষে মার্কেটে অযথা জটলা বা ভিড় সৃষ্টি করা যাবে না। যাদের কেনাকাটা শেষ হয়ে যাবে মার্কেট কর্তৃপক্ষ মাইকিং করে তাদের বের করে দেয়ার ব্যবস্থা করবেন।

১১. শপিংমলগুলোতে প্রবেশ ও বাহিরের আলাদা পথ নির্ধারণ করে দিতে হবে।

১২. যারা মাস্ক না পড়ে আসবে তারা মার্কেট থেকে কিনে নিবে অন্যথায় যাতে মার্কেটে প্রবেশ করতে না পারে ভলানটিয়ারের মাধ্যমে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।

১৩. প্রত্যেক শপিংমলের পার্কিং লটে গাড়ি জীবানুমুক্ত করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। এছাড়াও ড্রাইভাররা যাথে একত্রিত হয়ে আড্ডা না দেয় এবং নিজ নিজ গাড়িতে অবস্থান করে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

১৪. শপিংমলগুলোতে যাতায়াতের জন্য সীমিত পরিসরে সাধারণ রিকশা ও সিএনজি চালু থাকবে। তবে সিএনজিতে দুইজনের অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। প্রতিটি যাত্রী এবং চালক মাস্ক পরিধান করবেন।

উল্লেখিত বিষয়গুলো মেনে চলতে নগরবাসীর সহযোগিতা চেয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে