মত প্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাত রাষ্ট্রদূতের টুইটের প্রেক্ষিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেছেন, ‘এটা কোনো কূটনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না।’
শনিবার গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী টুইটের প্রতিক্রিয়ায় এই অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা কোনো কূটনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। পৃথিবীতে কোনো দেশে রাষ্ট্রদূতদের জটলা করে এমনভাবে বিবৃতি দিতে দেখিনি। এটা খুবই দুঃখজনক। তাদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তবে তা প্রটোকল অনুযায়ী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাতে পারতেন।’
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার, ইইউর রাষ্ট্রদূত রেনসে তেরিঙ্ক, নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হ্যারি ভেরওয়েজ, যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত রবার্ট ডিকসন, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিডসেল ব্লেকেন, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত শার্লোট স্লাইটার ও ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি এসট্রাপ পিটারসন আলাদা আলাদা টুইটে রাষ্ট্রদূতরা করোনা পরিস্থিতির মধ্যে নির্ভরযোগ্য তথ্য প্রচারে মত প্রকাশ ও বাক স্বাধীনতার ওপর জোর দেন।
রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য রাজনীতিক মহড়ায় চলে গেছে মন্তব্য করে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘তারা রাজনীতির মহড়ায় চলে গেছেন। তারা প্রকাশ্যে বিবৃতি দিচ্ছেন। তারা কি এ দেশে রাজনীতি করবেন? এ দেশে নির্বাচন করবেন? নাকি অন্য কোনো কিছু? এসব মতলব সুবিধার না।’
এ সময় মন্ত্রী মিয়ানমারের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘আমি খুব খুশি হতাম এই রাষ্ট্র্রদূতেরা যদি জটলা করে বলতেন, রাখাইনে যুদ্ধ হচ্ছে, এটা বন্ধ হওয়া উচিত।’
রাষ্ট্রদূতরা প্রটোকল মেনে কাজ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বলেন, ‘আমি আশা করব তারা তাদের প্রটোকল মানবেন এবং তারা সেভাবেই কাজ করবেন।’
এদিকে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সম্প্রতি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বাংলাদেশে নতুন করে গ্রেপ্তারের সংবাদে শুক্রবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এলিস ওয়েলস।
এছাড়া আন্তর্জাতিক কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনও এর প্রতিবাদ জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা (আইসিটি) আইনে সম্প্রতি লেখক-সাংবাদিক-কার্টুনিস্টসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারবিরোধী বিভিন্ন পোস্ট দিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।