করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দেশব্যাপী স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে সীমিত আকারে গণপরিবহন চালু করার দাবি জানিয়েছে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। একইসঙ্গে গণপরিবহন চলাচলের জন্য ১১টি সুপারিশ করেছে সংগঠনটি।
আজ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সামসুদ্দীন চৌধুরী এই দাবি জানান।
যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশে ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি চলছে। ছুটিতে সারাদেশ কার্যত লকডাউন থাকার কথা। প্রথমদিকে সব বন্ধ থাকলেও গত কয়েকদিন পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। দিনমজুর, গৃহকর্মীসহ শ্রমজীবী মানুষে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ছে।
পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। সে কারণে সীমিত আকারে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালুর করা দরকার।
বিজ্ঞপ্তিতে সামসুদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘জীবন যেমন জরুরি তেমনি জীবিকাও দরকার। আর এ দুটোকে সমন্বয় করতে গেলে গণপরিবহন চালুর বিকল্প নেই। জীবিকার তাগিদে একটু একটু করে সবই চালু করতে হবে। তবে তা স্বাস্থ্যবিধি মেনে।’
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহনে ৪০ সিটের গাড়িতে ২০ সিট পরিপূর্ণ করে এক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী বহন করলে ও গাড়িতে উঠার আগে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করার ব্যবস্থা এবং প্রতি টিপ শেষে জীবাণুনাশক স্প্রে দিয়ে গাড়ি পরিষ্কার করলে করোনার সংক্রমণ থেকে যাত্রীদের রক্ষা করা সম্ভব। একইসঙ্গে ৭০ লাখ পরিবহন শ্রমিকদেরও রুটি রুজি শুরু হবে।’
করোনা প্রতিরোধে গত ২৬ মার্চ থেকে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ১৬ মে পর্যন্ত গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সময়ে গণপরিবহন পর্যায়ক্রমে উন্মুক্ত করা হবে।
গণপরিবহন খোলার ক্ষেত্রে সংগঠনটিটি ১১টি সুপারিশ করেছে। এগুলো হচ্ছে-
১) বাস স্টপেজ ও রেল স্টেশনে আসা যাত্রীদের তাপমাত্রা মাপার জন্য স্টেশনে ইনফ্রারেড থার্মোমিটার রাখতে হবে।
২) যাত্রীদের চলাচলের স্থানগুলো পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।
৩) বাস স্টপেজ ও রেলস্টেশনে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
৪) যাত্রীদের অপেক্ষা করার স্থান, বাস কম্পার্টমেন্ট ও অন্যান্য এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
৫) যাত্রীদের মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহারে সচেতন করতে হবে।
৬) সিট কভারগুলোকে প্রতিনিয়ত ধোয়া, পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৭) যাত্রীদের অনলাইনে টিকিট কেনার পরামর্শ দিতে হবে।
৮) গণপরিবহনের ওঠা ও নামার সময় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য যাত্রীদের সচেতন করতে হবে।
৯) গণপরিবহনের চালক-শ্রমিক ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, পিপিই ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
১০) যাত্রীদের স্বাস্থ্য সচেতন করার জন্য পত্রিকা, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অডিও, ভিডিও ও পোস্টারের মাধ্যমে সচেতনতামূলক বক্তব্য প্রদান করতে হবে।
১১) যুক্তিসঙ্গতভাবে পরিবহনের ধারণক্ষমতা সীমিত করে যাত্রী নিয়ন্ত্রণ ও যথাসম্ভব যাত্রীদের আলাদা বসার ব্যবস্থা করতে হবে। ফেরি বা নৌ টার্মিনাল এবং নৌযানগুলোকে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।