সমালোচনার মুখে পড়েছেন জাহিদ ও মিজান

বিনোদন ডেস্ক

ফাইল ছবি

জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়ায় জন্য সরকার প্রথম থেকেই নির্দেশনা দিয়ে আসছে। এমনকি ঢাকা ত্যাগ ও প্রবেশেও আছে নিষেধাজ্ঞা। পাশাপাশি করোনাকালে টেলিভিশনের শুটিং বন্ধ রাখার নির্দেশও দিয়েছে টেলিভিশনের সব সংগঠন।

সরকার ও সংগঠনের এসব নির্দেশনা অগ্রাহ্য করে ১০ মে শুটিংয়ে অংশ নেন জনপ্রিয় অভিনেতা-নির্মাতা জাহিদ হাসান। আদিবাসী মিজানের একটি নাটকের জন্যই তিনি কাজটি করেন। আর তাই আন্ত-সংগঠনগুলোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন জাহিদ ও মিজান।
জনপ্রিয় একজন অভিনেতার এমন অসচেতনতামূলক আচরণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন সহকর্মী ও ভক্তরাও। তবে জাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার মতো কিছু ঘটেনি বলে মনে করে শিল্পীদের সংগঠন অভিনয় শিল্পীসংঘ। অপরদিকে পরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ড আরেকটু সময় নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে চায়।
বিষয়টি নিয়ে ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিক  বলেন, ‘এখানে দুটি বিষয় আছে। নিষেধাজ্ঞা ও সচেতনতা। নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করা ঠিক হয়নি। পাশাপাশি বলবো, আমাদের নিজেদের আগে সচেতন হতে হবে। অভিনেতা বা নির্মাতার বুঝতে হবে এখানে শুধু তিনি নন, তার পরিবারও যুক্ত। তিনি যদি আক্রান্ত হন, তার পরিবার ও সহকর্মীরা চরম ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। সচেতন কর্মী হিসেবে এটা কাম্য নয়। আর নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্যের বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। টেলিভিশনের আন্ত-সংগঠনগুলো একসঙ্গে কাজ করছি। আমরা দুই একদিনের ভেতরে জাহিদ হাসান ও আদিবাসী মিজানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।’
বিগত কয়েক বছর ধরেই ডিরেক্টরস গিল্ড, অভিনয় শিল্পীসংঘ, বাংলাদেশ টেলিভিশন প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশন ও নাট্যকার সংঘ একযোগে কাজ করে আসছে। পাশাপাশি এতে যুক্ত আছে টেলিভিশনের আরও কয়েকটি সংগঠন।
অভিনয় শিল্পীসংঘ মনে করে, জাহিদ হাসান ‘শেষ পর্যন্ত’ নির্দেশনা অমান্য করেননি। তাই তার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না!
প্রশ্ন করা হয়, জনপ্রিয় অভিনেতা হওয়ায় সিদ্ধান্ত নিতে কোনও প্রভাব পড়ছে কিনা? উত্তরে সমিতির সভাপতি শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘এখানে একটি বিষয় খেয়াল করুন, তারা গিয়েছিল কিন্তু শুটিং করেননি। তারা যেতেই পারেন। তবে যদি শুটিং করতেন, তাহলে আমরা ব্যবস্থা নিতাম। সংগঠনের ফোন পেয়ে তারা দ্রুত ফিরে এসেছেন। তাই জনপ্রিয় বা অজনপ্রিয় কোনও বিষয় এখানে আসবে না। তবে এ ঘটনায় প্রতিটি সংগঠনই তাদের নিজেদের ফেসবুক পেজে নোটিশ দিয়েছে, যেন নির্দেশের ব্যত্যয় না ঘটে। ঘটলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে এমন বিব্রতকর ঘটনা প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি অভিযুক্ত জাহিদ হাসানের।
শুটিং ইউনিট সূত্রে জানা যায়, এক বছর আগের পুরনো নাটকের অংশবিশেষ শুটিং করতে ১০ মে পূবাইলে গিয়েছিলেন পরিচালক মিজান ও তার দল। নাটকের প্রথমভাগের কাজ হয়েছিল নেপালে। ঈদে সম্প্রচারের জন্য রবিবার এর শেষ অংশ করছিলেন তারা।
নাটকে জাহিদ হাসান মায়ের সঙ্গে অভিমান করে দেশের বাইরে চলে যান। এবং সেখানে গিয়ে তার সব শেষ হয়ে যায়। জাহিদ মায়ের কাছে ফিরে আসেন এবং ক্ষমা চান। শেষের এ অংশটুকুরই কাজ চলছিল সেখানে। এতে অংশ নিতে তিনটি গাড়িতে করে চিত্রগ্রাহক আনোয়ার হোসেন বুলু, জাহিদ হাসান ও আদিবাসী মিজান পূবাইলে গিয়েছিলেন।
বিষয়টি চারদিকে জানাজানি হলে ডিরেক্টরস গিল্ড থেকে শুটিং বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরপরই শুটিং বন্ধ করে তারা ফিরে যান নিজ নিজ বাসায়।
যদিও এ ঘটনা নিয়ে মিডিয়ায় উঠেছে নিন্দার ঝড়। অভিযোগের আঙুল উঠছে অভিনয় শিল্পীসংঘের নতজানু সিদ্ধান্তের বিষয়ে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে