কঠিন খাদ্য সংকটে ৬৪ শতাংশ শিশুর পরিবার: সেভ দ্য চিলড্রেন

ডেস্ক রিপোর্ট

সেভ দ্য চিলড্রেন
ফাইল ছবি

করোনাভাইরাসে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বসবাসরত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিশুদের মধ্যে একটি জরিপ করেছে সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ।

সংস্থাটি জরিপ অনুযায়ী, ৬৪ শতাংশ শিশুর ভাষ্য, বর্তমানে তাদের পরিবার কঠিন খাদ্য সংকটে আছে।

universel cardiac hospital

শহুরে বস্তি, চা বাগান এবং সুবিধাবঞ্চিত গ্রামাঞ্চলের ১০-১৮ বছর বয়সী ১২১ জন শিশুর সঙ্গে টেলিফোন আলাপের মাধ্যমে এমন তথ্য উঠে এসেছে বলে জানাচ্ছে সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ।

এই ১২১ জনের মধ্যে ৪০ শতাংশ ছেলে ও ৬০ শতাংশ মেয়ে এবং প্রতিবন্ধী শিশুও রয়েছে।

জরিপটি চালিয়েছে সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের চাইল্ড রাইটস গভর্ন্যান্স ও চাইল্ড প্রোটেকশন সেক্টর।

মঙ্গলবার গণমাধ্যমে সংস্থাটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক বার্তায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সংস্থাটি বলছে, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উপার্জনক্ষম সদস্যরা আয়ের সুযোগ হারাতে থাকায় পরিবারের খাদ্য সুরক্ষা পরিস্থিতি একটি সংকটজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে।

সংস্থাটি আরও বলছে, এই শিশুদের মধ্যে বেশিরভাগই সরকার বা কোনো বেসরকারি সংস্থা থেকে সাহায্য পায়নি বলে তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়। এই তথ্য থেকে অনুমান করা যায় যে, সাধারণ খাদ্য বিতরণসহ সাম্প্রতিক সময়ে সরকার ঘোষিত উদ্যোগগুলো সংখ্যাগরিষ্ঠের কাছে পৌঁছায়নি এবং বেসরকারি উদ্যোগগুলোও অপর্যাপ্ত।

সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের শিশু সুরক্ষা ও শিশু অধিকার পরিচালনা সেক্টর পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এই সংকটটি শিশুদের শারীরিক এবং মনো-সামাজিক সুস্থতার উপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলছে। আমরা এই সংকট সম্পর্কে তাদের উপলব্ধি, মতামত পেতে সবচেয়ে প্রান্তিক শিশুদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি। আমরা আশা করি এই জরিপটি, শিশুদের ওপর এই সংকটের বিরূপ প্রভাব দূরীকরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকার এবং নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষন করবে।’

সংস্থাটি বলছে, ৯০ শতাংশ শিশুকে তাদের স্কুল থেকে লেখাপড়ার কোনো খোঁজ নেয়া হয়নি। ৯১ শতাংশের বাড়িতে পড়াশোনায় সাহায্য করার কেউ নেই এবং ২৩ শতাংশ বাসায় একেবারেই লেখাপড়া করছে না।

সাধারণত যে শিশুরা বাড়িতে লাঞ্ছনাকর শাস্তির মুখোমুখি হয়, তাদের মধ্যে ২১ শতাংশ কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে এই ধরনের শাস্তি বেড়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেছে। অন্যদিকে, শারীরিক শাস্তির ক্ষেত্রে এটি ৪৭ শতাংশ বেড়ে গেছে।

এই সমস্যা সমাধানে পাঁচটি সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। সুপারিশগুলো হলো-

১. সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে মহামারি ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি হ্রাস।

২. প্রয়োজন আছে এমন পরিবারগুলোর জন্য জীবিকার সহায়তা প্রদান

৩. স্কুল-কলেজের মাধ্যমে শিশুদের শিক্ষায় সহায়তা করতে নিয়মিত ফলো-আপ

৪. সহিংসতা থেকে শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ

৫. সংকট মোকাবেলায় শিশুদের মনো-সামাজিক সহায়তা প্রদান।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে