মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরিতে যে কয়েকটি দেশ এগিয়ে আছে তাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম। দেশটির ওষুধ কোম্পানি মডার্নার তৈরি ভ্যাকসিনটি প্রথম ধাপ পার করে এখন দ্বিতীয় ধাপে পরীক্ষার ছাড়পত্র পেয়েছে মার্কিন ওষুধ প্রশাসনের কাছ থেকে। দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষার কাজ দ্রুতই শুরু হবে।
মার্কিন নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) মডার্নার তৈরি করা কোভিড-১৯ মহামারির পরীক্ষামূলক টিকা ‘এমআরএনএ-১২৭৩’ দ্বিতীয় ধাপে পরীক্ষার অনুমোদন দেওয়ার সঙ্গে এই টিকা পরীক্ষার বিষয়টিকে বিশেষ অগ্রাধিকার হিসেবে ঘোষণা করেছে।
মডার্নার প্রধান নির্বাহী স্টিফেন হোজে বলেছেন, গ্রীষ্মেই তারা ভ্যাকসিনটির তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু করবেন। কারণ এরমধ্যে দ্বিতীয় ধাপের কাজ শেষ হবে বলে ধরে নেওয়া যায়।
প্রসঙ্গত, তৃতীয় ধাপে সাধারণত মানবশরীরে টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হয়। তার ফল ইতিবাচক হলে শুরু হয় পরের ধাপ।
মডার্না কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রথম ধাপে পরীক্ষায় খুব আশা জাগানিয়া ফল পাওয়া গেছে। এখন দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা দ্রুতই শুরু হবে। মানবদেহে প্রয়োগের জন্য এই ধাপে অন্তত ৬০০ জন স্বেচ্ছাসেবকের প্রয়োজন হবে; যাদের শরীরে সম্ভাব্য এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে দেখা হবে যে তা কতটা কার্যকরী ও নিরাপদ।
তবে এই ভ্যাকসিনটি দ্রুতগতিতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দ্রুতগতি বা ‘ফাস্টট্র্যাক’ অনুমোদনের অর্থ হলো, টিকার অনুমোদনের প্রক্রিয়া সাধারণ সময়ের চেয়ে দ্রুতগতিতে সম্পন্ন করা হবে। এর মূল বিষয়টি হলো, এফডিএ টিকার পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষাসংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত যাচাই করবে।
তবে একেবারে সর্বশেষ উপাত্ত পাওয়া বা বিশ্লেষণের জন্য বসে থাকবে না। মডার্না প্রধান স্টিফেন হোজে বলেন, ‘এই অনুমোদনের মধ্য দিয়ে এটিই প্রমাণিত হচ্ছে যে এফডিএ এই প্রক্রিয়াকে খুবই যুক্তিযুক্ত বলে মনে করে। আমরা এ বছরের শেষ নাগাদ এক কোটি টিকা তৈরি করতে পারব।’
দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষায় যে ৬০০ সুস্থ স্বেচ্ছাসেবী অংশ নেবেন তাদের মধ্যে অর্ধেকের বয়স ১৮ থেকে ৫৫ এর মধ্যে। আর বাকিদের বয়স হবে ৫৫ বছরের বেশি। দৈবচয়নের মাধ্যমে এক গ্রুপকে মর্ডানার পরীক্ষামূলক টিকা দেওয়া হবে। তারপর অপেক্ষা করা হবে এর ফলের জন্য।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বরাতে টাইম ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, তাদের ধারণা শিগগিরই কোভিড-১৯ (করোনা ভাইরাস)-এর প্রকোপ শেষ হবে না। টিকার সহায়তায় এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ও বিপুল পরিমাণ মানুষের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হবে।