ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত লেখক ও উপন্যাসিক দেবেশ রায় আর নেই। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার কিছু আগে কলকাতার তেঘরিয়া অঞ্চলের ঊমা নার্সিংহোমে তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ থাকা এই সাহিত্যিককে বুধবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উত্তর শহরতলির বাগুইআটির বাসিন্দা ছিলেন দেবেশ রায়। তার ছেলে আহমেদাবাদের বাসিন্দা। মৃত্যু সংবাদ পেলেও লকডাউন জনিত কারণে দ্রুত কলকাতায় পৌঁছাতে পারছেন না তারা।
বাংলা সাহিত্যের প্রকৃত ছকভাঙা উপন্যাসিক দেবেশ রায়। ১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশের পাবনা জেলার বাগমারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। দেশভাগের কিছু আগে ১৯৪৩ সালে তিনি পরিবারের সঙ্গে পূর্ববঙ্গ ছেড়ে জলপাইগুড়ি চলে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সময় থেকেই প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। রাজনীতির সূত্রেই চষে ফেলেছেন তামাম উত্তরবঙ্গ। শিখেছিলেন রাজবংশী ভাষা। এই সাহিত্যিক কলকাতা শহরেও চুটিয়ে ট্রেড ইউনিয়ন করতেন, ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল শ্রমিকসমাজের সঙ্গে।
আহ্নিক গতি ও মাঝখানের দরজা’, ‘দুপুর’, ‘পা’, ‘কলকাতা ও গোপাল’, ‘পশ্চাৎভূমি’, ‘ইচ্ছামতী’, ‘নিরস্ত্রীকরণ কেন’, ও ‘উদ্বাস্তু’- এই আটটি গল্প নিয়ে দেবেশ রায়ে র প্রথম গল্পের বই বের হয়।
১৯৭৯ সাল থেকে তিনি এক দশক পরিচয় পত্রিকা সম্পাদনা করেন। তার প্রথম উপন্যাস যযাতি। তার রাজনৈতিক বীক্ষার ছাপই পড়ে সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাস তিস্তাপারের বৃত্তান্ততে। উত্তরবঙ্গের জীবনের বহতা ধরা আছে এই উপন্যাসে। শ্রীরায় বাস্তববাদী উপন্যাসের প্রচলিত ছক থেকে সরে গিয়ে বহুস্বরকে নিয়ে আসেন।
মানুষ খুন করে কেন, মফস্বলী বৃত্তান্ত, সময়-অসময়ের বৃত্তান্ত- একের পর এক উপন্যাস লেখেন তিনি। ১৯৯৮ সালে লেখা তিস্তাপাড়ের বৃত্তান্ত-এর জন্য ১৯৯০ সালে তিনি অকাদেমি পুরস্কারে সম্মানিত হন।