আজাদ রহমানের মৃত্যুতে মোকতাদির চৌধুরী এমপি’র শোক

মোহাম্মদ সজিবুল হুদা

আজাদ রহমান-মোকতাদির চৌধুরী
আজাদ রহমান-মোকতাদির চৌধুরী

না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন বরেণ্য সংগীতজ্ঞ আজাদ রহমান। আজ শনিবার রাজধানী শ্যামলীতে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

আজাদ রহমানে মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার বোন মাসুমা মান্নান লীনা। তিনি জানান, গতকাল শুক্রবার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসা চলছিল। শনিবার বিকেল সাড়ে চারটায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন আজাদ রহমান। তিনি স্ত্রী এবং তিন মেয়ে রেখে গেছেন।

দেশবরেণ্য সঙ্গীতজ্ঞ আজাদ রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।

গণমাধ্যমে পাঠানো শোক বার্তায় মোকতাদির চৌধুরী জানান, আধুনিক বাংলা গানের কিংবদন্তি পুরুষ সঙ্গীতজ্ঞ আজাদ রহমানের পরলোক গমনে দেশের সঙ্গীত জগতে এক অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি হল। আমি এই বরেণ্য সংগীতজ্ঞের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, আজাদ রহমান ‘আমার ধন্য হলো মা গো’, ‘ভালোবাসার মূল্য কত’, ‘ও চোখে চোখ পড়েছে যখনই’, ‘মনেরও রঙে রাঙাব’, ‘ডোরা কাটা দাগ দেখে বাঘ চেনা যায়’সহ অনেক গানে সুর দিয়েছেন।

তিনি ১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি কীর্তন, ধ্রুপদী সঙ্গীতের পাশাপাশি খেয়াল, টপ্পার চর্চা করেন।

পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশে এসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন আজাদ রহমান।

১৯৬৩ সালে কলকাতার ‘মিস প্রিয়ংবদা’ চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালনার মধ্য দিয়ে আজাদ রহমানের চলচ্চিত্রে আগমন। সেই চলচ্চিত্রে তার সুরে কণ্ঠ দেন মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, আরতি মুখার্জি ও প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বাবুল চৌধুরীর ‘আগন্তুক’ চলচ্চিত্রের গানে সুর দেওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে শুরু হয় আজাদ রহমানের পথ চলা।

তার সুর করা ও তার নিজের কণ্ঠে গাওয়া এপার ওপার চলচ্চিত্রের ‘ভালবাসার মূল্য কত’, ডুমুরের ফুল চলচ্চিত্রের ‘কারো মনে ভক্তি মায়ে’, দস্যু বনহুর চলচ্চিত্রের ‘ডোরা কাটা দাগ দেখে বাঘ চেনা যায়’ গানগুলো সত্তরের দশকে তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।

তিনি চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনার পাশাপাশি ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মা গো- এর মতো কালজয়ী দেশাত্মবোধক গানেও সুর দিয়েছেন।

১৯৭৭ সালে ‘যাদুর বাঁশি’ চলচ্চিত্রের জন্য এবং ১৯৯৩ সালে ‘চাঁদাবাজ’ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ‘চাঁদাবাজ’ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ গায়ক হিসেবেও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে