ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ আগামী মঙ্গলবার (১৯ মে) রাতে দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে আঘাত হানতে পারে- এমন খবরে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে খুলনার ৩৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছে। সতর্ক করে উপকূলের বিভিন্ন স্থানে চলছে মাইকিং।
সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে রয়েছেন খুলনার কয়রা, দাকোপ ও পাইকগাছা উপজেলার বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ এলাকায় অবস্থান করা মানুষজন। তারা আশঙ্কা করছেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আঘাত হানলে গ্রামের বেড়িবাঁধটি ভেঙে যাবে। এতে লোনাপানিতে পুরো এলাকা ভেসে যাবে।
এদিকে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ঘূর্ণিঝড়ে দুই লাখ ৩৮ হাজার ৯৫০ জনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনতে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া জেলা-উপজেলায় পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এরই মধ্যে উপকূলবাসীকে সতর্ক করতে মাইকিং শুরু হয়েছে।
খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবিলায় সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। করোনার মধ্যে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজে লাগানো হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতি এড়াতে রেডক্রিসেন্ট, সিপিপিসহ দুই হাজার ৪৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। বেসরকারি এনজিওর রয়েছে আরও ১১০০ স্বেচ্ছাসেবক। এরই মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। সেখানে প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এ পর্যন্ত বাংলাদেশের দিকে ৪৫ কিলোমিটার এগিয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে বাতাসের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। আরও শক্তিশালী হয়ে কলকাতা ঘেঁষে সুন্দরবনের উপকূলীয় অঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসছে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার, যা দমকা হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে এবং গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।