যৌনপল্লী থেকে শতাধিক তরুণীকে উদ্ধার করেন সুনীল

বিনোদন প্রতিবেদক

শতাধিক তরুণীকে যৌনপল্লী থেকে উদ্ধার করেন সুনীল

বলিউডের নব্বইয়ের দশকের অন্যতম অ্যাকশন হিরো সুনীল শেঠি। বহু ছবিতে যেমন তিনি হিরোর চরিত্রে অভিনয় করেছেন, তেমন কয়েকটিতে দেখা গেছে ভিলেনের চরিত্রেও। তার ঝুলিতে আছে বেশ কিছু ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড। তবে বাস্তব জীবনেও যে সুনীল শেঠি হিরো, সেই তথ্য অনেকেরই অজানা। শতাধিক তরুণীকে তিনি যৌনপল্লী থেকে উদ্ধার করে মূলস্রোতে ফিরিয়ে দেয়ার কাণ্ডারী।

এই গল্প জানতে ফিরে যেতে হবে ২৪ বছর আগে। সালটা ১৯৯৬। মহারাষ্ট্রের কামাঠিপুরা যৌনপল্লীতে মহারাষ্ট্র পুলিশ আচমকাই হানা দেয় একদিন। প্রায় ৪৫৬ জন নারীকে সেই যৌনপল্লী থেকে উদ্ধার করা হয়, যাদের বেশিরভাগেরই বয়স ১৪ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। এদের মধ্যে প্রায় প্রত্যেককেই জোর করে দেহ ব্যবসায় নামানো হয়েছিল। বেশিরভাগই তখন ছিল নাবালিকা।

universel cardiac hospital

৪৫৬ জনের মধ্যে ১২৮ জন ছিলেন নেপালের বাসিন্দা। যেহেতু এদেরকে অবৈধ ভাবে জোর করে এই ব্যবসায় নিয়ে আসা হয়েছিল, তাই কারও কাছেই বয়সের প্রমাণ, পাসপোর্ট কিছুই ছিল না। এদিকে নেপাল সরকারও তাদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য পয়সা খরচ করতে নারাজ ছিল। অসহায় ওই সব নারীদের কান্নার স্বর পৌঁছায় সুনীল শেঠির কানে।

তখন সবাই প্রায় তাদের বাড়ি ফেরার আশা ছেড়ে দিয়েছিল। ঠিক সেই সময়েই ত্রাতার ভূমিকায় আবির্ভাব হন সুনীল। ওই সব নারীদের জন্য বিমানের ব্যবস্থা করেন। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছাতে পারেন, তার পুরো তদারকির ভার নিজের কাঁধে নিয়েছিলেন নায়ক।

সুনীল শেঠির শাশুড়ি বিপুলা কাদরির একটা এনজিও ছিল। নিজে সমস্ত খরচ বহন করলেও এই ঘটনার সম্পূর্ণ ক্রেডিট তিনি দেন মুম্বাই পুলিশ এবং তার শাশুড়ির পরিচালিত এক এনজিওকে। শুধু তাই নয়, মিডিয়ার কাছেও এ ব্যাপারে টুঁ শব্দটি করেননি। নিঃশব্দে নিজের কাজ করে গেছেন।

কিন্তু কেন? পরবর্তীকালে এক সাক্ষাৎকারে সুনীল বলেছিলেন, সে সময় ওই সব নারীদের নিরাপত্তা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তিনি যদি মিডিয়াকে এর মধ্যে জড়াতেন, তাহলে সেই সব নারীদের নাম, পরিচয়, সব লোকসমক্ষে চলে আসার বিপুল সম্ভাবনা ছিল।

তাহলে কীভাবে সামনে এল এই ঘটনা। ওই সব নারীদের মধ্যে একজন ছিলেন চারিমায়া তামাং। তিনি নেপালের বাসিন্দা। সুনীলের সেদিনের সেই উপকারের কথা তিনি ভোলেননি। সম্প্রতি চারিমায়াই সুনীলের এই বিশাল কর্মকাণ্ডের কথা জানান মিডিয়ার কাছে। তার সঙ্গে এখনও যোগাযোগ রেখেছেন সুনীল।

অন্ধকার থেকে আলোয় ফিরে কিছু দিন আগে ‘শক্তি সমূহ’ নামে নিজের এনজিও খুলেছেন চারিমায়া। পাচার হয়ে যাওয়া নিষ্পাপ মেয়েদের রক্ষা করাই তার সংগঠনের কাজ। সুনীলের এই বিশাল কর্মকাণ্ডের কথা প্রকাশ পেতেই তার তারকা বন্ধুরাও প্রশংসায় ফেটে পড়েছিলেন। বাস্তব জীবনেও তিনি যে হিরো, প্রমাণ করেছিলেন সুনীল।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে