করোনা পরিস্থিতিতে হজ নিয়ে অনিশ্চয়তা

মত ও পথ প্রতিবেদক

হজ
ফাইল ছবি

এ বছর হজে অংশগ্রহণ ও পবিত্র কাবা শরিফ প্রদক্ষিণে অংশ নেয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছেন বিশ্বের লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান। তবে সৌদি সরকারের সিদ্ধান্ত ও করোনা পরিস্থিতির ওপরই নির্ভর করবে এবারের হজ হবে কি হবে না।

করোনা ভাইরাসের কারণে এ বছর পবিত্র হজ পালন বাতিল হতে পারে এমন জল্পনা-কল্পনার মধ্যে মুসলমানদের হজের জন্য তাদের পরিকল্পনা বিলম্বিত করার আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরব সরকার।

করোনা পরিস্থিতিতে হজ হবে কি হবে না এ বিষয়ে সৌদি সরকারের কাছ থেকে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল্লাহ। খবর ইউএনবি।

তিনি বলেন, দেখুন সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাস। করোনা পরিস্থিতির এবং সৌদি সরকার সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে এবার হজ হবে কি হবে না।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, এ বছর সৌদি আরবে হজ পালন করতে বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ জন যেতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৭ হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ২০ হাজার জন।

সূত্রটি জানায়, হজ নিবন্ধনের সময় কয়েক দফা বাড়ানোর পর শেষ দফায় সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে মাত্র ৬৪ হাজার ৫৯৪ জন নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৪৫৭ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬১ হাজার ৫৯৪ জন।

এর আগে ২৪ ফেব্রুয়ারি হজ পালনে সরকার পরিচালিত সর্বনিম্ন ব্যয় ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করে প্যাকেজ-৩ এর আওতায় হজ প্যাকেজ-২০২০ এর খসড়া অনুমোদন দেয় মন্ত্রিপরিষদ।

হজে যাওয়ার জন্য নিবন্ধন প্রক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতেও হজে হজযাত্রী পাঠাতে আমরা নিবন্ধন করার কাজ করে যাচ্ছি যাতে যদি সৌদি সরকার হজের ঘোষণা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে হজযাত্রী পাঠাতে পারি।’

তবে এবার করোনা পরিস্থিতিতে সৌদি সরকারের সিদ্ধান্ত এখনও না পাওয়ার কারণে হজযাত্রী নিবন্ধিত সংখ্যা অনের কম হয়েছে।

যদি এবছর নিবন্ধিত হজযাত্রীরা হজে না যেতে পারেন তাহলে কী করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা ইতিমধ্যে হজে যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করে রেখেছেন তারা যদি সৌদি সরকারের সিদ্ধান্তের কারণে হজে না যেতে পারেন তাহলে আগামী বছর তারা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে হজে যেতে পারবেন।

হজের জন্য যারা টাকা জমা দিয়েছেন তাদের আশ্বস্ত করে অ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আপনারা কোনো চিন্তা করবেন না। এবার হজে না যেতে পারলে আগামীবার যাবেন। আগামীবার না যেতে চাইলেও তার টাকা ফেরত পাবেন। এ বিষয়ে আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি।’

চলতি বছর হজে যেতে আগ্রহীদের নিবন্ধণ কার্যক্রম ৩০ এপ্রিল শেষ হয়েছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব নুরুল ইসলাম বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে নিবন্ধনের সময় আর বাড়ানো হবে না।

এখন সারা বিশ্বের অবস্থা সবার জানা এবং এ পরিস্থিতিতে হজ নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সৌদি সরকার হজের বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখে তারপর যা করার করা হবে।

তিনি আরও বলেন, হজ নিয়ে সিদ্ধান্ত যাই আসুক, যারা হজের জন্য টাকা জমা দিয়েছেন তারা প্রতারিত হবেন না।

হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, ‘হজের নিবন্ধন শেষ করে আমরা প্রস্তুত আছি।’

এবারের হজ হবে কি হবে না বলাটা খুবই কঠিন উল্লেখ করে তিনি বলেন, সৌদি সরকারে সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে এবছর হজ হবে কি হবে না। আমরা তাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এ বছর আগামী ৩০ জুলাই (৯ জিলহজ) হজ হওয়ার কথা রয়েছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে