মঙ্গলবার রাতে দেশের ক্রিকেটের শুরুর দিকের তিন নায়ক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, আকরাম খান ও খালেদ মাসুদ পাইলটকে নিয়ে লাইভ আড্ডার ব্যবস্থা করেছিলেন তামিম ইকবাল। মাঝে বিশেষ অতিথি হিসেবে হাজির হয়েছিলেনপাকিস্তানি কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরাম।
এ চারজনের আড্ডায় বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে নব্বইয়ের দশকের ক্রিকেট। স্মৃতির পাতা হাতড়ে আকরাম খান তার মিতা ওয়াসিম আকরামকে মনে করিয়ে দেন ১৯৯৫ সালের এশিয়া কাপের একটি ঘটনা।
যেখানে বাংলাদেশ অধিনায়ক আকরামকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন পাকিস্তানি অধিনায়ক ওয়াসিম আকরাম। ঘটনাটি ভুলে গিয়েছলেন ওয়াসিম। মনে করিয়ে দেন আকরাম খান। আকরাম, নান্নু, পাইলটের আড্ডার মাঝে ওয়াসিম যোগ দেয়ার পর প্রসঙ্গটা আনেন আকরাম খান।
ওয়াসিমের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘১৯৯৫ সালের এশিয়া কাপের কথা মনে আছে ওয়াসিম ভাই? ভারতের বিপক্ষে আপনি খুবই দারুণ বল করেছিলেন। শচিনকে (টেন্ডুলকার) ইচ্ছেমত বাউন্সার দিয়েছিলেন। সেই ম্যাচে আপনারাই জিতেছিলেন।’
এরপরই ঘটে যায় হুমকি দেয়ার সেই ঘটনা! পাকিস্তানের পরের ম্যাচ ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে। ওয়াসিম জানতে চাচ্ছিলেন টস জিতলে বাংলাদেশ কী করবে? সে অনুযায়ী অনুশীলনের সূচি সাজাবে পাকিস্তান। কিন্তু তখন অনিচ্ছাকৃতভাবেই ভুল তথ্য দেয়া হয়ে যায় আকরাম খানের।
সেটি মনে করে আকরাম বলেন, ‘পরেরদিন আমাদের সঙ্গে ম্যাচ ছিল আপনাদের। আমিই তখন বাংলাদেশের অধিনায়ক। আপনি এসে জিজ্ঞেস করলেন, টস জিতলে আমরা কী নেবো? আমি বলেছিলাম, আগে বোলিং করব। আপনি আশ্বস্ত হয়ে বললেন, তাহলে ঠিক আছে। এই গরমের মধ্যে আর তাহলে অনুশীলনে যাব না।’
টসের সিদ্ধান্তের এই ঘটনা থেকেই হুমকির সুত্রপাত। কেননা পরদিন ম্যাচে বাংলাদেস টস জিতে নেয় আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত। যা পুরোপুরি হতচকিয়ে দেয় পাকিস্তান দলকে। তাই একপ্রকার হুমকিই দিয়েছিলেন ওয়াসিম। টসের সিদ্ধান্ত বদলের পেছনে ছিল নান্নুর বড় ভূমিকা।
আকরাম বলতে থাকেন, ‘টসের সময় যাচ্ছিলাম। নান্নু ভাই এসে বললেন, ফিল্ডিং কেন নেবে? ওরা আগে ব্যাট করলে তিনশর বেশি রান করবে, কীভাবে হবে? জিতলে ব্যাটিং নিও। আমি টস জিতে ব্যাটিং নেই, এরপর আপনি ড্রেসিংরুমে এসে আমাকে বললে, ‘আকরাম তুমি আসো, তোমাকে দেখে নেবো।’
তবে পরে আর দেখে নেয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি ওয়াসিম ও আকরামের মধ্যে। শুধুই খেলোয়াড়িসুলভ এক মজা ছিল সেই হুমকি। সেই দুই দলের মধ্যেই সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেছিলেন আকরাম খান। নিজেদের পুরো ৫০ ওভার খেলে বাংলাদেশ করেছিল ৮ উইকেটের বিনিময়ে করেছিল ১৫১ রান। পাকিস্তান সহজেই জিতেছিল ৬ উইকেটের ব্যবধানে।