আজ বুধবার দিবাগত রাতে পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবেকদর। পবিত্র কোরআনের ঘোষণা অনুযায়ী হাজার মাসের চেয়ে উত্তম রাত এটি। আজ সূর্যাস্তের পর থেকে কাল ফজরের আগ পর্যন্ত এ রাতের তাৎপর্য বহাল থাকবে। সারা বিশ্বের মুসলমানরা ইবাদত-বন্দেগিসহ বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে পালন করে এ মহিমান্বিত রজনী।
তবে বর্তমান ভয়াবহ করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এবার ভিন্ন আঙ্গিকে শবেকদর উদ্যাপন করবে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। অন্যবার এ উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ সারা দেশের মসজিদে আলোচনা, মিলাদ, নফল ইবাদত ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হলেও এবার তেমন কোনো আনুষ্ঠানিকতা থাকছে না।
এ বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ মত ও পথকে জানান, শবেকদর পালনের বিষয়ে নতুন করে কোনো নির্দেশনা নেই। শর্ত সাপেক্ষে মসজিদগুলো যথারীতি খোলা থাকছে। এ ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
ইসলাম ধর্মের বিধান অনুযায়ী, অন্য সময় এক হাজার মাস ইবাদত করলে যে সওয়াব পাওয়া যায়, শবেকদরের রাতে ইবাদত করলে তার চেয়ে বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। তাই এ রাতে ইবাদত-বন্দেগি করে আল্লাহর কাছে গুনাহ মাফের জন্য মোনাজাত করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। এ কারণে মুসলমানদের কাছে শবেকদরের গুরুত্ব ও ফজিলত অতুলনীয়।
হাদিস শরিফে আছে, ২০ রমজানের পর যেকোনো বেজোড় রাত কদর হতে পারে। তবে ২৬ রমজানের দিবাগত রাতেই লাইলাতুল কদর আসে বলে বেশির ভাগ আলেমের অভিমত। শবেকদরের এ রাতে মুসলমানদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে সর্বশেষ আসমানি কিতাব পবিত্র কোরআন শরিফ অবতীর্ণ হয় এবং এ রাতকে কেন্দ্র করে কোরআন শরিফে ‘আল কদর’ নামে একটি সুরাও নাজিল করা হয়।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলমানদের মতো বাংলাদেশের মুসলমানরাও নিজেদের গুনাহ মাফ এবং অধিক সওয়াব অর্জনের আশায় ঘরোয়া পরিবেশে নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, জিকির-আজকারের মধ্য দিয়ে রাতটি অতিবাহিত করবে। পবিত্র এ রাতে অনেকে কবরস্থানে গিয়ে আত্মীয়-স্বজনের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করে। এ ছাড়া সাধ্যমতো দান-সদকা করে থাকে অনেকে।
শবেকদর উপলক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সরকারি ছুটি থাকবে। এ উপলক্ষে দৈনিক পত্রিকাগুলো বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করবে। বিটিভিসহ বেসরকারি টেলিভিশন ও বেতারে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হবে।