বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করা নভেল করোনাভাইরাসে একদিনে আরও ৪ হাজারের মতো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে শনাক্তের পর গত পাঁচ মাসে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৯৮২ জনের মৃত্যু হলো। আক্রান্তের সংখ্যাও ৫৪ লাখ পেরিয়েছে।
আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডওমিটারের দেয়া সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে সারা বিশ্বে নতুন করে ৩৯৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৬৪৭ জন।
চীনের উহান থেকে বিস্তার শুরু করে গত পাঁচ মাসে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। চীনে করোনার প্রভাব কমলেও বিশ্বের অন্য কয়েকটি দেশে মহামারি রূপ নিয়েছে।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নেয়া হয়েছে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ। অধিকাংশ দেশেই মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করতে মানুষের চলাফেরার ওপর বিভিন্ন মাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। কোনো কোনো দেশে আরোপ করা হয়েছে সম্পূর্ণ লকডাউন, কোথাও কোথাও আংশিকভাবে চলছে মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রম। এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকার প্রায় অর্ধেক মানুষ চলাফেরার ক্ষেত্রে কোনো না কোনো মাত্রায় নিষেধাজ্ঞার ওপর পড়েছেন।
তবে এরই মধ্যে কোনো কোনো দেশে করোনার প্রভাব কমে যাওয়া লকডাউন শিথিল ও নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। নিউমোনিয়ার মত লক্ষণ নিয়ে নতুন এ রোগ ছড়াতে দেখে চীনা কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সতর্ক করে। এরপর ১১ জানুয়ারি প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।
চীন থেকে শুরু হওয়ার পর ইউরোপকে বিপর্যস্ত করে এখন যুক্তরাষ্ট্র হয়ে উঠেছে মহামারির কেন্দ্রস্থল।
সবচেয়ে বেশি কোভিড-১৯ রোগীর দেশটিতে আজ সকাল পর্যন্ত মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছে মোট ৯৮ হাজার ৬৮৩ জনের নাম।
আক্রান্তের সংখ্যাতেও সবার ওপরে আছে যুক্তরাষ্ট্র। আজ পর্যন্ত দেশটিতে মোট ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৮২৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে।
আক্রান্তের দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে চলে এসেছে ব্রাজিল। সেখানে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৪১৩ জন। মৃত্যু হয়েছে ২২ হাজার ১৬৫ জনের। রাশিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৮৮২ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩৩৮৮ জনের। স্পেনে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৮২ হাজার ৩৭০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৮ হাজার ৬৭৮ জনের।