করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যে সুপার সাইক্লোন আমপানের আঘাত হানার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কথায় আছে বিপদ কখনও একা আসে না। মহামারির মধ্যে গত বুধবার রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল এবং চট্টগাম বিভাগসহ উপকূলীয় জেলাগুলোতে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আঘাত হানে। তবে আগাম প্রস্তুতির কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো গেছে।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে আসা সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে রোববার সন্ধ্যায় দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আল্লাহর অশেষ রহমত এবং আমাদের আগাম প্রস্তুতির কারণে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে যাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি না হয়, সেজন্য বিভিন্ন দ্বীপ, চরাঞ্চল এবং সমুদ্র-উপকূলে বসবাসকারী ২৪ লাখেরও বেশি মানুষকে এবং প্রায় ৬ লাখ গবাদিপশু আমরা ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করি।
সর্বাত্মক প্রস্তুতি সত্বেও গাছ ও দেওয়াল চাপায় বেশ কয়েকজন মানুষের মৃত্যু ও বহু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে আমরা ইতোমধ্যেই ত্রাণসামগ্রী বিতরণ শুরু করেছি এবং ঘরবাড়ি মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে।
করোনায় যারা সামনে থেকে কাজ করছেন তাদের অভিনন্দন
প্রধানমন্ত্রী করোনায় সামনে থেকে কর্মরত ডাক্তার, নার্সসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের ঈদুল ফিতরের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। শুভেচ্ছা জানান পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যবৃন্দ এবং কেন্দ্রীয় ও মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকক্ষেত্রে করোনায় আক্রান্ত মৃত ব্যক্তির দাফন ও সৎকারের ব্যবস্থাও তাদের করতে হচ্ছে। এসব কাজ করতে গিয়ে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য, ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মী, প্রশাসনের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মকর্তা, ব্যাংক কর্মী এবং সংবাদকর্মী করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন।
তিনি বলেন, বেশ কয়েকজন ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্য, প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং ব্যাংক ও সংবাদকর্মী ইতোমধ্যে মারা গেছেন। আমি তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ইতোমধ্যে আমরা চিকিৎসা সক্ষমতা অনেকগুণ বৃদ্ধি করেছি। সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হাসপাতালকেও আমরা করোনাভাইরাস চিকিৎসায় সম্পৃক্ত করেছি।
তিনি বলেন, জরুরিভিত্তিতে ২ হাজার ডাক্তার এবং ৫ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছেন। হাসপাতালগুলোতে সকল ধরনের রোগীর চিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সংবাদকর্মীদের ধন্যবাদ
সংক্রমণের ঝুঁকি উপেক্ষা করে করোনা সংক্রান্ত পরিস্থিতি তুলে ধরে মানুষকে সচেতন করতে সহায়তা করার জন্য সংবাদকর্মীদের ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা জানান সরকারপ্রধান।