উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ছে। তবে উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদীগুলো পানি দ্রুত বাড়ছে, এতে আগামী দুইদিনের মধ্যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও নেত্রকোনা অঞ্চলে স্বল্প মেয়াদী বন্যা দেখা দিতে পারে।
আজ বুধবার বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের ‘দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা সম্পর্কিত বিশেষ প্রতিবেদনে’ এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বুধবার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদী সারিগোয়াইনের পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ সেন্টিমিটার বেড়ে সিলেটের সারিঘাটে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অধিদফতরের গাণিতিক মডেল ভিত্তিক তথ্য মতে, বঙ্গোপসাগর থেকে আগত দক্ষিণমুখী ঝড়ো হাওয়া এবং দেশের উপর দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর প্রভাব বিস্তারের সম্ভাবনার প্রেক্ষিতে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও কাছাকাছি ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত পর্যবেক্ষণ করা যাচ্ছে, যা আগামী ৩০ মে পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
এতে বলা হয়, আসাম অঞ্চলের বিভিন্ন অংশে (গোয়াহাটি-তেজপুরে) ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে উত্তরাঞ্চলের ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যা আগামী ২৮ মে পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। তবে, এ সময়ের মধ্যে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর কোথাও বিপৎসীমা অতিক্রমের সম্ভাবনা নেই।
- আরও পড়ুন >> করোনা ও ভণ্ডনেতা।। মোহাম্মদ সজিবুল হুদা
একই সময়ে আসামের বরাক ও মেঘালয় অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত পর্যবেক্ষণ করা যাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। মেঘালয় অঞ্চলে ২ দিনের ক্রমপুঞ্জিভূত সম্ভাব্য বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১০০-১৫০ মিলিমিটার। এর ফলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা, কুশিয়ারাসহ প্রধান নদীগুলোর পানি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। আগামী ২৪-৪৮ ঘণ্টায় সারিঘাট, যদুকাটা ও কংস নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) মো. আরিফুজ্জামান ভূইয়া বলেন, পরবর্তী সময়ে (আগামী ২৪-৪৮ ঘণ্টা) আসামের বরাক ও ত্রিপুরা অংশে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ অংশে তিন দিনের ক্রমপুঞ্জিভূত সম্ভাব্য বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২০০-২৫০ মিলিমিটার। যার ফলে সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার কুশিয়ারা, মনু ও খোয়াই নদীর পানি সমতল উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেতে পারে এবং মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার কোথাও কোথাও পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।