পারমাণবিক অস্ত্রধারী ২ চিরবৈরী প্রতিবেশি ভারত এবং চীনের চলমান সীমান্ত উত্তেজনায় সমাধানে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। লাদাখ সীমান্তে সাম্প্রতিক উত্তেজনার পর দুই দেশের সামরিক বাহিনী ও সামরিক সরঞ্জামের উপস্থিতি ঘিরে তৈরি হওয়া ক্রমবর্ধমান সঙ্কটের মাঝে বুধবার এক টুইট বার্তায় এই মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেন তিনি।
টুইটে তিনি বলেন, আমরা ভারত এবং চীনকে জানিয়েছি, যুক্তরাষ্ট্র তাদের ক্রমবর্ধমান সীমান্ত বিরোধের মধ্যস্থতা বা সালিশি করতে প্রস্তুত, ইচ্ছুক এবং সক্ষম। আপনাদের ধন্যবাদ!
গত বছরের আগস্টে কাশ্মীর ইস্যুতে প্রতিবেশি পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হলে সেখানেও মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট। কিন্তু নয়াদিল্লি সেই সময় দ্বিপাক্ষিক সঙ্কটে তৃতীয় পক্ষের সহায়তার দরকার নেই বলে ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।
সীমান্তে সাম্প্রতিক উত্তেজনার পর লাদাখে সৈন্য সমাবেশ এবং সামরিক সরঞ্জাম মজুদ করছে চীন এবং ভারত। প্রতিবেশি দুই দেশের এই উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করেছে লাদাখের বিতর্কিত সীমান্তে চীন অস্বাভাবিক সামরিক সরঞ্জাম মজুদ করছে বলে স্যাটেলাইট চিত্রে ধরা পড়ার পর।
দুই দেশের মাঝে অন্তত সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। এর আগে, মঙ্গলবার চীনের প্রেসিডন্টে শি জিনপিং দেশটির সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে দৃঢ়তার সঙ্গে দেশের সাবভৌমত্ব রক্ষার আহ্বান জানান তিনি।
শি জিনপিংয়ের এই নির্দেশের পর চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝ্যাও লিজিয়ান বলেন, দুই দেশের নেতাদের ঐক্যমত এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী, সীমান্ত সঙ্কটে চীনের অবস্থান একেবারেই পরিষ্কার।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের সার্বভৌম ভূখণ্ড, নিরাপত্তা এবং শান্তির সুরক্ষা ও সীমান্ত এলাকায় স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বর্তমানে চীন এবং ভারত সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি মোটাদাগে স্থিতিশীল এবং নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এদিকে, চীনের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে ভারতের তিনবাহিনীর প্রধানের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে লাদাখে নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দেন ভারতীয় এই প্রধানমন্ত্রী।
গত ৯ মে লাদাখ সীমান্তে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একদল সদস্যের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডার এক পর্যায়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে চীনা সৈন্যরা। ওই সময় চীনা সৈন্যরা ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করলে বাধা দেয়া হয় বলে জানায় নয়াদিল্লি।
ওইদিন লাদাখের গালওয়ান নদীর কাছে তাঁবু খাটানোর চেষ্টা করে চীনা সেনাবাহিনীর সদস্যরা। ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভিযোগ, লাদাখের বিতর্কিত অঞ্চলে চীনা সামরিক হেলিকপ্টার অবৈধ অনুপ্রবেশ করে টহলও দিচ্ছে। ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রধান আরকেএস ভাদৌরিয়া বলেছেন, লাদাখে চীনা হেলিকপ্টারের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ বৃদ্ধি করেছে ভারত।
সূত্র: এনডিটিভি।