প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের তাণ্ডব থামছেই না। প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন এই ভাইরাসটিতে। মৃত্যুর সংখ্যাও প্রতিদিন দীর্ঘ হচ্ছে। এর মধ্যে কয়েকটি দেশে করোনা প্রকোপ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
শুক্রবার একদিনে বিশ্বে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন সোয়া লাখেরও বেশি। গতকাল সারাবিশ্বে এক লাখ ২৫ হাজার ৬২১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৪৮৮০ জন। একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ৭৯ হাজার ৬২১ জন।
করোনাভাইরাস নিয়ে লাইভ আপডেট দেয়া ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার এই তথ্য জানিয়েছে।
শনিবার সকাল পর্যন্ত করোনায় বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৬৬ হাজার ৮৯০ জনে এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ লাখ ৩০ হাজার ২৯৪ জন। অপরদিকে ২৬ লাখ ৫৯ হাজার ২৫০ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীন থেকে এই মহামারি শুরু হলেও ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রে তাণ্ডব চালিয়েছে করোনাভাইরাস। এখন এর কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে রাশিয়া, ব্রাজিল ও ব্রিটেন।
আক্রান্ত ও নিহতের সংখ্যায় সবার ওপরে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ লাখ ৯৩ হাজার ৫৩০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে এক লাখ চার হাজার ৫৪২ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ১৯ হাজার ৫৬৯ জন।
আক্রান্তের দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে চলে আসা ব্রাজিলে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৩৩৮ জন, মৃত্যু হয়েছে ২৭ হাজার ৯৪৪ জনের।
রাশিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৬২৩ জন, মৃত্যু হয়েছে ৪৩৭৪ জনের। স্পেনে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৮৫ হাজার ৬৪৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৭ হাজার ১২১ জনের।
মৃত্যুর দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্রিটেন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৩৮ হাজার ১৬১ জন, আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৭১ হাজার ২২২ জন। এছাড়া ইতালিতে মারা গেছেন ৩৩ হাজার ২২৯ জন।
চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে শনাক্ত হওয়া ভাইরাসটি এখন মহামারি রূপ নিয়েছে সারাবিশ্বে। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নেয়া হয়েছে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ। অধিকাংশ দেশেই মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করতে মানুষের চলাফেরার ওপর বিভিন্ন মাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। কোনো কোনো দেশে আরোপ করা হয়েছে সম্পূর্ণ লকডাউন, কোথাও কোথাও আংশিকভাবে চলছে মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রম। এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকার প্রায় অর্ধেক মানুষ চলাফেরার ক্ষেত্রে কোনো না কোনো মাত্রায় নিষেধাজ্ঞার ওপর পড়েছেন। তবে এরই মধ্যে কোনো কোনো দেশে করোনার প্রভাব কমে যাওয়া লকডাউন শিথিল ও নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে।