দেশের ৩০ থেকে ৪০ ভাগ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে গেছেন বলে ধারনা পোষণ করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের করোনা শনাক্তকরণ কিট উদ্ভাবক দলের প্রধান বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের দেশে এরই মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে গেছেন। তবে তারা সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু তারা যে আক্রান্ত হয়েছেন, তারা হয়তো জানেন না। হয়তো সামান্য জ্বর হয়েছে, কাশি হয়েছে, দুর্বলতা অনুভব করেছেন।’
শনিবার রাতে একটি সংবাদমাধ্যমের ফেসবুক লাইভে অংশ নিয়ে তিনি তার এ ধারণার কথা তুলে ধরেন।
ইউরোপ-আমেরিকাকে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছে করোনাভাইরাস। সে তুলনায় সরকারি-বেসরকারি হিসাব মেলালে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রভাব সেই আকারে দেখা যাচ্ছে না, এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউরোপসহ উন্নত বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। ইউরোপের মানুষের ইমিউন ব্যবস্থা ‘স্ল্যাগিশ’।
ইউরোপে যখন করোনা সংক্রমিত হয় তখন তাপমাত্রা কম ছিল এবং বাতাস চলাচলও কম ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের তীব্রতা ৩০ থেকে ৪০ ভাগ কমে গেছে। এখানে ইমিউন সিস্টেমসহ কিছু বিষয় কাজ করেছে। তবে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস যদি জানুয়ারিতে আসত তাহলে এর তীব্রতা আরও বেশি হতো। মার্চে যেহেতু এসেছে, সে কারণে এখানে এর তীব্রতা কম দেখা যাচ্ছে।
বিজন কুমার শীল বলেন, হার্ড ইউমিনিটিতে পৌঁছাতে হলে ৮০ ভাগ মানুষকে আক্রান্ত হতে হবে। যা আগামী এক মাসের মধ্যে ঘটতে পারে বলে আমি মনে করি।
হার্ড ইমিউনিটি হচ্ছে এক ধরনের ‘কমিউনিটি ইমিউনিটি’, যখন সমাজের অনেক বেশি জনগোষ্ঠীর মাঝে কোনো সংক্রামক ব্যাধির বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। ফলে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নেই কিংবা দুর্বল, তাদেরও ওই রোগ হতে পরোক্ষভাবে সুরক্ষা দেওয়া যায়।
তিনি বলেন, করোনা যেহেতু ছড়িয়েছে, সেহেতু আমরা যতই ঘরে লুকিয়ে থাকি, কাউকেই ছাড়বে না। ঝড় হলে যেমন প্রত্যেক গাছকেই টাচ করে যায়, করোনাও আমাদের প্রত্যেককে আক্রান্ত করবে। এক্ষেত্রে যাদের বয়স বেশি, অন্য অসুস্থতা আছে, তাদের ঝুঁকি বেশি। যারা শক্ত-পোক্ত, মনোবল দৃঢ়, তাদের ভয় কম।
করোনার এই দুঃসময়ে তিনি স্বাস্থ্যবিধি মনে চলার পাশাপাশি মনোবল দৃঢ় রাখার পরামর্শ দেন। ড. বিজন বলেন, মনোবল শক্ত থাকলে ইমিউন সিস্টেম দৃঢ় হয়, তাতে ভাইরাস ততটা শক্ত আক্রমণ করতে পারে না। তাছাড়া নিয়ম করে গারগল করতে হবে। ভিটামিন সি খেতে হবে, জিঙ্কসহ।