বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) দাপ্তরিক কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও মাঠের খেলা বন্ধ আড়াই মাস। ১৭ মার্চ থেকে গৃহবন্দি তামিম-মুশফিকরা। দীর্ঘদিন সর্বোচ্চ সতর্কতায় কাটানোর পরও যখন দেশের করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না তখন প্রশ্ন উঠছে- এভাবে আর কত!
জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা আরও দীর্ঘদিন অলস সময় কাটালে নিশ্চিত করেই প্রভাব পড়বে হঠাৎ ম্যাচ খেলতে নামলে। ব্যাপারটি ভাবালেও ক্রিকেটারদের জন্য শতভাগ সুরক্ষা নিশ্চিত না করে মাঠে ফিরিয়ে ঝুঁকি নিতে চায় না বিসিবি।
বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বললেন, আমরা তো অবশ্যই ভাবছি কী করে খেলা ফেরানো যায়। কেননা আমাদের আইসিসির এফটিপি আছে, প্রিমিয়ার লিগ আছে। সবকিছু নিয়েই আমাদের পরিকল্পনা আছে। আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছি। প্রথমে আমরা অফিস প্রস্তুত করব, জীবাণুনাশ করতে যা যা করা প্রয়োজন করব, খেলোয়াড়দের অনুশীলন সুবিধা শতভাগ নিশ্চিত করতে যা যা করার সেগুলো করব।
তিনি বলেন, এগুলো প্রস্তুত করার পরে যদি বাস্তব পরিস্থিতি বলে যে আমরা অনুশীলন শুরু করতে পারব আইসিসির প্রটোকল মেনে, একটি গাইডলাইনও তারা দিয়েছে, সেটা অনুসরণ করে অন্যান্য দেশ কীভাবে করছে সেটা অনুসরণ করে তারপরে শুরু করব। এখানে তাড়াহুড়ো করার কোনো সুযোগ নেই। এমন একটা অবস্থা, একটা দুর্ঘটনা ঘটলে এই দায়দায়িত্ব ক্রিকেট বোর্ডের উপরই বর্তাবে।
ঈদের পর সরকার নতুন করে ছুটির মেয়াদ বাড়ায়নি। সীমিত পরিসরে খুলেছে সব দোকানপাট। সোমবার থেকে রাজধানীর বুকে চলবে গণপরিবহনও। করোনা পরিস্থিতি দিনদিন খারাপের দিকে গেলেও স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে মানুষের জীবন। জীবিকার তাগিদ তুচ্ছ বানিয়েছে জীবনের মায়াকে। সংক্রমণের শঙ্কা নিয়েই মানুষ ছুটছে যার যার গন্তব্যে। দলে দলে যোগ দিচ্ছে কাজে।
করোনার বিস্তার রোধে গত ১৬ মার্চ এক প্রজ্ঞাপন জারি করে দেশের সবধরনের খেলাধুলা স্থগিত করার ঘোষণা দেয় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি দেশের পরিস্থিতি। বরং দিনদিন আক্রান্ত রোগী ও মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। বাস্তব অবস্থার কথা চিন্তা করেই ক্রিকেটারদের ঝুঁকিতে ফেলতে চায় না বিসিবি।
বিসিবির সিইও বলেন, আমরা বর্তমান প্রেক্ষাপটে নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি মনিটর করছি। সরকারের যে নির্দেশনা সেটা শুধু স্পোর্টস ফেডারেশনের জন্য না। এটা হচ্ছে সরকারের জন-গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি সম্পর্কে নির্দেশনা। স্পোর্টস কিন্তু মানুষের জীবনের অনেক পরের একটি অংশ। এটা বিনোদনের একটা অংশ। আপনারা যারা এখানে কাজ করেন বা আমি বা ক্রিকেটারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ খেলা না থাকলে আমার চাকরি থাকবে না। আমরা কী করে চলব? এর বাইরে দেশের ১০ ভাগ মানুষের জন্যও স্পোর্টস এখন গুরুত্বপূর্ণ না। মানুষ এখন আউটডোর বিনোদনের কথা ভুলেও ভাবছে না। বরং কী করে সুস্থ থাকা যায় সেটা নিয়েই বেশি ব্যস্ত।