করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ভার্চুয়ালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা অনুষ্ঠিত হলো। এতে ১৬ হাজার ২৭৬ কোটি ৩ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকার দেবে ১৪ হাজার ৪০১ কোটি ৫২ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ এক হাজার ৮৮১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সাধারণ ছুটির পর প্রথম একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। চলতি অর্থবছরের ২৩ তম ও বর্তমান সরকারের ৩২তম এ সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেন। সভা শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
অনুমোদিন প্রকল্পের মধ্যে ‘কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস’ প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ১ হাজার ১২৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংকের দেওয়া সহজ শর্তের ঋণ ৮৫০ কোটি টাকা, বাকি টাকা ব্যয় করা হবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে। প্রকল্পের আওতায় করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করতে নির্বাচিত হাসপাতালে টেস্টিং সুবিধা বাড়ানো, করোনা চিকিৎসা সংক্রান্ত বিভিন্ন সরঞ্জাম কেনা এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণসহ নানা সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে। এছাড়া ‘কোভিড-১৯ ইর্মাজেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক রেসপন্স’ নামে ১ হাজার ৩৬৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকার প্রকল্প। এই প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৮৫০ কোটি টাকা ৯৭ লাখ টাকা আসছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণ থেকে, বাকি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হবে।
প্রকল্পের আওতায় দেশের ১৭টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা ইউনিট দিয়ে সজ্জিত করা, কমপক্ষে ১৯টি পরীক্ষাগারের সক্ষমতা ও গুণগত মানকে কোভিড-১৯ মাইক্রোবায়োলজিক্যাল ডায়াগনস্টিক সুবিধা দিয়ে উন্নত করা হচ্ছে। এছাড়া স্বাস্থ্য খাতের কমপক্ষে ৩ হাজার ৫০০ জন কর্মীকে আধুনিক দক্ষতা এবং জ্ঞানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে পিসিআর মেশিন, পিসিআর ল্যাব, আইসিইউ, পিপিই ও মাস্ক কেনার কাজে এই প্রকল্পের টাকা খরচ করা হচ্ছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য ‘প্রাথমিক উপবৃত্তি (তৃতীয় পর্যায়)’ দ্বিতীয় সংশোধিত প্রকল্পটির বাস্তবায়নে সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় হবে ১৩ হাজার কোটি টাকা।
এছাড়া তিন হাজার ১২৮ কোটি টাকার ‘মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম (সপ্তম পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্প, যা পুরোটাই সরকারি ব্যয়ে হবে।
করোনাভাইরাসের কারণে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা অনলাইন মাধ্যমে তথা ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শতভাগ পল্লী বিদ্যুতায়নের জন্য বিতরণ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ( রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগ) প্রকল্প, এটি প্রথম সংশোধিত প্রকল্প। ; শতভাগ পল্লী বিদ্যুতায়নের জন্য বিতরণ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ( ঢাকা , ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ) প্রকল্প, এটি প্রথমও সংশোধিত প্রকল্প। এছাড়া কৃষি যন্ত্রপাতি ও লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন ব্যবস্থাকে অধিকতর লাভজনক করা’ প্রকল্প। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৫ সালে। মানসম্পন্ন বীজ উৎপাদন, প্রক্রিয়াজতকরণ ও বিতরণ প্রকল্প, এর কাজ শেষ হবে ২০২৪ সালে। সাতক্ষীরা জেলার পোন্ডার ১, ২, ৬, ৮, এবং ৬-৮ (এক্সটেনশন) এর নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প। এ প্রল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৩ সালে। দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্প। এটি প্রথম সংশোধিত প্রকল্প যার মেয়াদ শেষ হওয়ার সময় ধরা হয়েছে ২০২২ সাল।